বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
আট সদস্য গ্রেফতার

তিন হাত ঘুরে বিক্রি হচ্ছে চোরাই ফোন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বড় বড় শপিং মল থেকেই বিক্রি হচ্ছে চোরাই মোবাইল  ফোন সেট। অনেকক্ষেত্রে বিক্রির সময় ক্রেতাকে সিম ব্যবহার না করার শর্ত দেওয়া হচ্ছে। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফোনের আইএমই পরিবর্তন করে ফেলে। এ জন্য চক্রে রয়েছে দক্ষ টেকনিশিয়ান। চুরি হওয়ার পর এ রকম মোবাইল সেট তিন হাত ঘুরে বিক্রির জন্য   দোকানে পৌঁছায়। পাশাপাশি চোরাই মোবাইল সেট বহুদিন ধরে ভারতে পাচার হচ্ছে। পক্ষান্তরে ভারতের চোরাই মোবাইলও আসছে দেশে। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে  আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।

এর আগে, গত মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় ধারাবাহিক অভিযানে সংঘবদ্ধ চোরচক্রের আট সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- মনির হোসেন, মো. মোতাহার হোসেন, মো. সুরুজ হোসেন, মো. শাহজালাল, মো. মেহেদী হাসান, কুমার সানি, মো. হৃদয় ও শামীম ওসমান। তাদের কাছ থেকে ১৫৮টি মোবাইল সেট ও একটি ল্যাপটপ এবং ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানার একটি আইফোন চুরির মামলার তদন্তে নেমে চক্রটিকে শনাক্ত এবং গ্রেফতার করা হয়।

তারা ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ফোন চুরিসহ সংঘবদ্ধ চোরচক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। বর্তমানে মোবাইল ফোনের চাহিদা বেড়েছে, এই সুযোগে মোবাইল ফোন চুরি ও ছিনতাই বেড়েছে। এ ছাড়াও মোবাইল ফোন চুরির ঘটনায় আসামি গ্রেফতার হলেও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। এতে চোরচক্রটি কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে একই কাজে নেমে পড়ছে। তবে মোবাইল ফোন চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে জোরালো অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

ডিবি কর্মকর্তা হাফিজ আক্তার বলেন, চুরি বা ছিনতাই করা মোবাইল ফোন সাধারণত তিনটি হাত বদল হয়ে থাকে। এক প্রাথমিক অবস্থায় চোর বা ছিনতাইকারী। তারা ৪-৮ হাজার টাকায় দ্বিতীয় হাতে বিভিন্ন মোবাইল মার্কেটে বা দোকানে বিক্রি করে দেয়। এরপর তারা ব্যক্তি বা ক্রেতাদের কাছে ১৫-৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকে। আর যে সব মোবাইল ফোনে পাসওয়ার্ড লক থাকে সেগুলোর পার্টসগুলো আলাদা বিক্রি করে থাকে টেকনিশিয়ানরা। এই তিন হাত বদলের ক্ষেত্রে পুরো চক্রটি বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করেন।

চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার অভিযান করতে গিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে আইফোনের প্রতি বেশি ঝোঁক তাদের। তারা চোরাই আইফোনের ইআইএমই নম্বর ফ্লাস দিয়ে পরিবর্তন করে বিক্রি করছে। গ্রেফতারদের মধ্যে মোবাইল ফোন বিক্রেতা, টেকনিশিয়ান, চোর ও ছিনতাইকারীরা রয়েছে। তবে, সর্বশেষ বিক্রি হচ্ছে দোকান থেকেই। এ জন্য দোকানিদের অনুরোধ করব, চোরাই মোবাইল বিক্রি থেকে বিরত থাকুন। অন্যথায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর