বঞ্চিত হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তারা জানান, নারী কাউন্সিলরদের কাজ করার ক্ষেত্রে নানা জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নারী প্রতিনিধিরা জনগণকে সেবা দিতে পারছেন না। নারী প্রতিনিধিরা জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদপত্র দিতে না পারায় তাদের মর্যাদাহানিসহ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষ সেবাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কারণ পরিবারের নারীরা এসব কাজে বেশি সময় দেন। অনেক স্থানীয় নারী জনপ্রতিনিধিদের কাছে এসব কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সূত্র জানায়, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রথম পরিষদের পাঁচ বছর নারী কাউন্সিলররা সব ধরনের সনদপত্র প্রদান করতে পারলেও দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত নারী কাউন্সিলরদের সেবা প্রদানের ক্ষেত্র সীমিত করা হয়। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের একজন সেবাপ্রত্যাশী কামরুন্নাহার। তিনি বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধন করতে গিয়ে মহিলা কাউন্সিলরের কাছ থেকে ফিরে এসেছি। তারা নাকি জন্ম নিবন্ধন করতে পারেন না। তাহলে তাদের ভোট দিয়ে কী লাভ।’
সাধারণ ওয়ার্ড ১৩, ১৪, ১৫ ও সংরক্ষিত ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, বর্তমান কাউন্সিলর প্রার্থী নুরজাহান আলম পুতুল বলেন, ‘আমাদের জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন করার দায়িত্ব না দেওয়ায় জনগণের প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি। জনগণের ভোটের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের লক্ষ্যে প্রাপ্য অধিকারটুকু প্রতিষ্ঠা করার দাবি করছি।’
সাধারণ ওয়ার্ড ১, ২, ৩ ও সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, কাউন্সিলর প্রার্থী কাউছারা বেগম সুমি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রের এমন কোনো সেক্টর বর্তমানে নেই যেখানে নারীর পদচারণা নেই। সংরক্ষিত আসনের একজন কাউন্সিলর জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনে আমাদেরও দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’সাধারণ ওয়ার্ড ৭, ৮, ৯ ও সংরক্ষিত ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, কাউন্সিলর প্রার্থী উম্মে কুলসুম মুনমুন বলেন, ‘জনগণের সরাসরি ভোটে তিনগুণ বেশি ভোটারের ভোটে নির্বাচিত হয়েও আমরা অবহেলিত। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের কাজ আমরা করতে না পারায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে।’
সাধারণ ওয়ার্ড ৪, ৫, ৬ ও সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, কাউন্সিলর প্রার্থী নাদিয়া নাছরিন বলেন, ‘অন্যান্য কাজের পাশাপশি জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন করার ক্ষমতা আমাদের দেওয়া উচিত। কাজ করতে না পেরে আমরা জনগণের প্রশ্নের মুখে পড়ছি।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নারী জনপ্রতিনিধিরা সম্মানিত হোক সেটা আমিও চাই। যেগুলো আইনে নেই এমন অনেক কাজেও তাদের অগ্রাধিকার দিয়েছি। তবে আইনে না থাকায় তাদের নিবন্ধনের সঙ্গে সংযুক্ত করা যাচ্ছে না। আমরা মন্ত্রী ও সচিব মহোদয়কে তাদের দাবির বিষয়গুলো জানিয়েছি। মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিলে তাদের কাজের সুযোগ দিতে পারব।’
উল্লেখ্য, এবার ছয়জন মেয়র প্রার্থী, ১১৬ জন সাধারণ কাউন্সিলর এবং ৩৮ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন। ২৭ মে প্রতীক বরাদ্দ। ১৫ জুন ভোট গ্রহণ করা হবে।
