মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বে লাঠির ঘায়ে প্রাণ গেল বড় ভাইয়ের

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, সেই শফিকুল গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

নোয়াখালীর কবিরহাটে পৈতৃক সম্পত্তির ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে দেলোয়ার হোসেন (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। তার ছোট ভাই আবদুল হাই মাস্টারের (৪৩) লাঠির আঘাতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সাজেদা আক্তার (৪০) বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার রাজধানীর জিগাতলা থেকে আবদুল হাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংস্থাটির পৃথক অভিযানে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে শফিকুল নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২১ মে বিকালে কবিরহাটের নবাবপুরে পৈতৃক সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে দেলোয়ার ও আবদুল হাইয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে দেলোয়ার হোসেনের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন আবদুল হাই। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন দেলোয়ার। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে নোয়াখালীর মাইজদীতে গুডহিল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

 সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে পাঠানো হয় ঢাকায়। কিন্তু ঢাকায় আনার আগেই মারা যান তিনি।

মুক্তা ধর বলেন, এ ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে সিআইডি নজরদারি শুরু করে। পরে ২২ মে ভিকটিমের স্ত্রী সাজেদা আক্তার কবিরহাট থানায় মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় আবদুল হাই মাস্টার ও তার স্ত্রী নিলুফা ইয়াছমিন শিউলীকে (৩৮)। মামলার পর ছায়াতদন্ত শুরু করে সিআইডি। তদন্তের একপর্যায়ের প্রধান আসামি আবদুল হাইকে জিগাতলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি খুনের কথা স্বীকার করেছেন। ভিকটিম ও অভিযুক্ত আবদুল হাই- তারা পাঁচ ভাই ও পাঁচ বোন। সবাই বিবাহিত। সব ভাই একই বাড়িতে বসবাস করলেও আলাদা আলাদা ঘরে তাদের ভিন্ন ভিন্ন সংসার। এর মধ্যে আবদুল হাই মাস্টার সব ভাই-বোনের মধ্যে ৪০ শতাংশ বেশি পৈতৃক সম্পত্তি ভোগ করছিলেন। এ নিয়ে তার বড় ভাই দেলোয়ারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সবশেষ ২১ মে জমি ভাগাভাগি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর পরই হত্যাকান্ডে র ঘটনা ঘটে।

পৃথক আরেক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, শফিকুল ইসলাম (৩২) গত ১১ বছরে বিয়ে করেছেন চারটি। প্রতিটি বিয়ের পরই যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। সর্বশেষ সাতক্ষীরার রোজিনা বেগমকে (৩৩) চতুর্থ বিয়ে করেন ২০২০ সালে। যৌতুকের বিষয়ে কথাকাটাকাটির পর তাকে গলা টিপে হত্যা করেন শফিকুল। এরপর তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। তাকে রবিবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) আকবর শাহ থানা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শফিকুল জানিয়েছেন, তিনি প্রথম বিয়ে ২০০৯ সালে, নিজ এলাকায় কোহিনুর খাতুনকে (১৮)। এ সংসার মাত্র দুই মাস স্থায়ী হয়। দ্বিতীয় বিয়ে ২০১১ সালে। এ সংসারের স্থায়িত্ব ছিল ১ বছর ২ মাস। তাদের জান্নাতি (৯) নামে একটি সন্তান রয়েছে। তৃতীয় বিয়ে ২০১৪ সালে চট্টগ্রামের ফয়’স লেক এলাকায়। তাদের খাদিজা আক্তার সুমাইয়া (৭) নামে একটি সন্তান রয়েছে। এ সংসার থাকতেই চতুর্থ বিয়ে করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর