শুক্রবার, ৩ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

কাজ হচ্ছে না অভিযানেও

প্রভাব পড়েনি রংপুরের চালের বাজারে, মিলে মিলে অভিযান চান ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অভিযানের পরও চালের বাজারে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। ব্যবসায়ীদের মাঝে জরিমানা আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় অনেকেই সীমিত পরিসরে ব্যবসা করছেন। ব্যবসায়ী-আড়তদাররা মনে করছেন- যেখানে অভিযান হওয়া দরকার সেখানে অভিযান না চালিয়ে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। অটো রাইস মিলগুলোতে এখনো লাখ লাখ মেট্রিক টন ধান-চাল মজুদ রয়েছে।

জানা গেছে, বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জে চালের আড়তে অভিযান চালিয়ে ৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ২৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। বিক্রির রসিদ না দেওয়া এবং মূল্য তালিকা না থাকায় তাদের জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া নগরীর উত্তম এলাকায় জেলা খাদ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে ৮০০ টন ধান মজুদ ও অনুমোদন ছাড়া ব্যবসা পরিচালনা করায় নর্দান অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি অটো রাইস মিল বন্ধ করে দিয়েছে। বিকালেও মাহিগঞ্জে অভিযান পরিচালিত হবে এমনটাই জানিয়েছে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর।

চাল ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চাল মজুদের জন্য অটো রাইস মিলগুলো দায়ী। অটো রাইস মিলগুলো হাজার হাজার মণ ধান-চাল মজুদ রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। সেখানে অভিযান না চালিয়ে ছোট ছোট আড়তদারদের জরিমানা করা হচ্ছে। অভিযানের সময় অনেক ব্যবসায়ী আতঙ্কে ব্যবসা প্রতিষ্ঠন বন্ধ রেখে গা-ঢাকা দিচ্ছেন। অভিযান শেষ হলে তারা আবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলছেন। এতে বাজারের চালের দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বর্তমানে মোটা এবং চিকন চাল প্রকারভেদে কেজি ৪৫ থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, খাদ্য অফিসের কিছু কর্মকর্তা অটো রাইস মিলগুলোর অবৈধভাবে ক্যাপাসিটি বাড়িয়ে দিয়ে ধানচালের মজুদ গড়ে তুলতে সাহায্য করছে। সেখানে অভিযান না চালিয়ে ছোট ব্যবসায়ীকে হয়রানি করা হচ্ছে। অটো রাইস মিলে অভিযান চালালে কয়েক দিনের মধ্যে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে তারা মনে করছেন। কেন্দ্রীয় অটো রাইস মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লাইক আহমেদের তথ্যমতে, সারা দেশে ৬৫০টি অটো রাইস মিল রয়েছে। এর উল্লেখযোগ্য অংশই উত্তরাঞ্চলে। এ রাইস মিলগুলোই চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। অথচ সরকারের ঘোষণার পরও অটো রাইস মিলগুলোতে অভিযানে ভোক্তা অধিকারসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের গা-ছাড়া ভাব লক্ষ্য করা গেছে। রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহী পাবনা, নওঁগা, সিরাজগঞ্জে  হাতে গোনা কয়েকজন লাখ লাখ মণ ধান মজুদ রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি- হাতে গোনা কয়েকটি অটো রাইস মিলে অভিযান চালালে চালের দাম কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে। রংপুর ধান চাতাল মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাসেম বলেন, অটো রাইস মিলগুলো চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। সেখানে অভিযান না চালিয়ে সাধারণ আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কারণ আড়তদাররা যতটুকু চালের অর্ডার পায় ততটুকু চালই গোডাউনে রাখে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর রংপুর জেলার উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা সরকারি নির্দেশনা পেয়েছি মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে।

 অটো রাইস মিলসহ সব স্থানেই আমাদের অভিযান চলবে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর