মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
সীতাকুন্ড ট্র্যাজেডি

ফায়ার ফাইটার রবিউলের অপেক্ষায় মা

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁ শহরের চকপাথুরিয়া ফকিরপাড়া মহল্লার খাদেমুল ইসলামের ছেলে ফায়ার ফাইটার রবিউল ইসলাম (২৭)। তিনি সীতাকুন্ড ফায়ার স্টেশনে ফায়ার ফাইটার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আগুন নেভানোর কাজে তিনিও অংশ নিয়েছিলেন। এরপর থেকে নিখোঁজ। শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সবশেষ মায়ের সঙ্গে কয়েক সেকেন্ড কথা হয় তার। মাকে ফোন দিয়ে ডিউটি যাওয়ার আগে দোয়া চেয়েছিলেন। ডিউটি থেকে ফিরে এসে সকালে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন রবিউল। আদরের সন্তান রবিউলের নিখোঁজ হওয়ার খবর শোনার পর থেকেই বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা ফাইমা খাতুন। গতকাল সকালে রবিউলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের শোকে কাতর মা ফাইমা খাতুন। বুক চাপড়াচ্ছেন আর বলছেন আল্লাহ আমার ছেলেকে তুমি ফিরিয়ে দাও।

ছেলেকে ফিরে পেতে মায়ের এমন আকুতিতে প্রতিবেশীদের চোখও অশ্রুসিক্ত হয়ে যায়। স্বজনরা ফাইমা খাতুনকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। রবিবার সকালে টেলিভিশনে সীতাকুন্ডে  অগ্নিকা  ও বিস্ফোরণে হতাহতের খবর দেখে রবিউলের এক বন্ধু মুঠোফোনে রবিউলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। পরে ফোনে তাকে না পেয়ে তার বাবা খাদেমুল ইসলামকে ফোন দেন। ছেলের বন্ধুর কাছ থেকে অগ্নিকান্ডে র ভয়াবহতার খবর শুনে খাদেমুল ইসলাম ছেলের মুঠোফোনে ফোন দিলে সীতাকু  ফায়ার স্টেশনের এক সহকর্মী সেই ফোন রিসিভ করে জানান, রাতে আগুন নেভানোর সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই বিস্ফোরণের পর থেকে রবিউলকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

খাদেমুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পুড়ে যাওয়া চারটি লাশ রয়েছে। লাশগুলো বীভৎসভাবে পুড়ে যাওয়ায় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। লাশ শনাক্তের জন্য রবিউলের বাবার শরীর থেকে হাসপাতালের লোকজন নমুনা নিয়েছেন। ডিএনএ টেস্টের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছি। তিনি আরও জানান, রবিউলরা তিন ভাইবোন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে রবিউল বড়। বাবা কৃষক, মা গৃহিণী। প্রশিক্ষণ শেষে ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্রথম কর্মস্থল হিসেবে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে  ফায়ার ফাইটার হিসেবে যোগ দেন রবিউল। সবর্শেষ গত ঈদুল ফিতরের আট দিনের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর