বুধবার, ৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

কোটি টাকা জরিমানা গুনল এফএমসিওটু

আদালতের সঙ্গে প্রতারণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোটি টাকা জরিমানা গুনল এফএমসিওটু

বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো-সিআইবির রিপোর্টে খেলাপি উল্লেখ করার পর সেটি স্থগিত রাখতে পাঁচ বছর ধরে উচ্চ আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করার অপরাধে ‘এফএমসিওটু’ নামে একটি কোম্পানিকে ১ কোটি টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে। জরিমানার টাকা জমা দেওয়ার পর গতকাল তাদের আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ আদেশকে যুগান্তকারী উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কোর্টের সঙ্গে প্রতারণা করে আদেশ নেওয়ায় তাদের ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হলো। এ আদেশ বিচারব্যবস্থায় নতুন একটা মাইলফলক। এভাবে কেউ প্রতারণার আশ্রয় নিতে গেলে কম করে হলেও তিনবার চিন্তা করবে।

আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল ছাড়াও ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ শুনানি করেন। আর কোম্পানিটির পক্ষে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অজি উল্লাহ।

মামলার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, ‘এফএমসিওটু’ নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর ঋণখেলাপি হিসেবে উল্লেখ করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্টে। তখন তারা হাই কোর্টে মামলা করে। ডিসেম্বর মাস থাকায় সে সময় বিচারিক আদালত বন্ধ ছিল। সিআইবির তালিকা চ্যালেঞ্জ করে বিচারিক আদালতে মামলা করবে জানিয়ে আদালত বন্ধ থাকাকালীন নিষেধাজ্ঞা চায় কোম্পানিটি। তখন হাই কোর্ট নিষেধাজ্ঞা জারি করে তাদের মামলা করতে বলে। এরপর ২০১৭ থেকে ২০২১ পর্যন্ত তারা কোনো মামলা না করে বারবার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়ে নেয়। ২০২২ সালের শুরুতে আবারও তারা মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করে। তখন বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের হাই কোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আদালতের এ প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে না পারায় এবং কোর্টের সঙ্গে চালাকি করার কারণে তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়ে ১ কোটি টাকা জরিমানা করেন হাই কোর্ট। এরপর হাই কোর্টের জরিমানার আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটি আপিল করে। পরে শুনানি না করে ওই আবেদনটিও তারা ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়। অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমাদের তথ্য জানানো হয়। তখন আমরা আদালতকে বললাম, আপনারা যদি এটা ডিসমিস করে দেন তাহলে তারা আর জরিমানার টাকাটা দেবে না। পরে আদালত প্রতিষ্ঠানটিকে টাকা জমা দিয়ে তারপর মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করতে বলেন।

আজকে (গতকাল) তারা টাকা জমা দিলে আদালত তাদের আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দেন।’

 

সর্বশেষ খবর