বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

পদ্মা সেতুতে শিল্পবিপ্লব ঘটবে খুলনা অঞ্চলে

আগ্রহী হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, অবকাঠামো উন্নয়নে পরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। এ সেতুতে যান চলাচলের মধ্য দিয়ে শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এ জনপদে। এরই মধ্যে ব্যবসায়ীরা রপ্তানিমুখী ও অভ্যন্তরীণ বাজারমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে আগ্রহ দেখিয়েছেন। খুলনা-মোংলা সড়কের দুই পাশে অনেকেই শিল্পপ্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য জমি কিনেছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শিল্পায়নে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে তুলনামূলক স্বল্প পারিশ্রমিকে সহজলভ্য শ্রমিক, অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে জমি প্রাপ্তির সুযোগ, কম দূরত্বে স্থলবন্দর ও নৌ বন্দর এবং ভোক্তা-চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনার সুযোগ রয়েছে। জানা যায়, এরই মধ্যে খুলনা-যশোর-কুষ্টিয়া-বাগেরহাটে হালকা প্রকৌশল শিল্পের প্রসার ঘটেছে। এ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। খুলনার রূপসার তীরবর্তী ফ্রোজেন ফুড ইন্ডাস্ট্রিগুলো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সক্ষম। এ ছাড়া এলপিজি গ্যাস, টেক্সটাইল শিল্প, কৃষিভিত্তিক শিল্প খাত, পাট ও পাটজাত পণ্য, মৎস্য শিল্প, ফুড অ্যান্ড অ্যালাইড ইন্ডাস্ট্রি, পোলট্রি অ্যান্ড ফিস ফিড ও পর্যটন বিকাশের সম্ভাবনা আছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক শাহনেওয়াজ নাজিমুদ্দিন আহমেদ জানান, গত ১০ বছরে খুলনা বিভাগে নিবন্ধিত শিল্পের মূল বিনিয়োগ প্রায় ২০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ অনেক আগেই ৬২ হাজার মিলিয়ন টাকা ছাড়িয়েছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর আমূল বদলে যাবে অর্থনৈতিক দৃশ্যপট। মোংলা বন্দরের উন্নয়ন, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা চারলেন প্রকল্প, খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা, বরিশাল বিভাগ ও খুলনা বিভাগের ২১ জেলায় অর্থনৈতিক কার্যাবলি আরও গতিশীল হবে।

এদিকে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে পোশাক শিল্প, আইসিটি খাত, ওষুধ শিল্পসহ মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পের প্রসার ঘটাতে অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নয়নের কথা বলেছেন শিল্প উদ্যোক্তারা।

খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী জানান, এ অঞ্চলে গার্মেন্ট করতে পারলে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। কিন্তু গ্যাস ছাড়া গার্মেন্ট করা যায় না। তেল বা ডিজেলনির্ভর প্রতিষ্ঠানে কাপড়ের সেই কোয়ালিটি আনা যায় না। তবে খুলনায় ইকনোমিক জোন হলে এখানে গ্যাসের দাবি জোরালো হবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর সুবিধা পেতে অবকাঠামো উন্নয়ন, মহাসড়ক ও কানেক্টিং সড়কগুলো আরও প্রশস্ত করতে হবে। জানা যায়, সড়ক বিভাগ খুলনা-মোংলা সড়কটি ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে এটি প্লানিং কমিশনে রয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর কাটাখালী-মোল্লাহাট-গোপালগঞ্জ-ভাঙ্গা ১০০ কিলোমিটার সড়কে চাপ বাড়বে সব থেকে বেশি। সড়ক প্রশস্ত না হলে দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগ বাড়বে। এই সড়কটিকে ছয় লেনে উন্নীত করার সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর