বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

আইন বাস্তবায়ন না হওয়ার অভিযোগ হারুনের

আমাকে আইন শেখাতে আসবেন না : আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইন বাস্তবায়ন না হওয়ার অভিযোগ হারুনের

সুপ্রিম কোর্ট জাজেস বিল উত্থাপনের আগে বিএনপি সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের আপত্তির জবাব দিতে গিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘আমাকে আইন শেখাতে আসবেন না। মাননীয় স্পিকার আমি আপনার মাধ্যমে বলতে চাই, উনি যে বিচারের কথা বললেন, আপনি কি ভুলে গেছেন ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট এর ঘটনার কথা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের ১৭ জন সদস্যদের হত্যার পরে কি বিচার হয়েছিল? তাদের বিচার করা দরকার ছিল কিনা? উনারা এখন কি বলবেন আমি জানি না, হয়তোবা বলবেন ইনডেমনিটি অর্ডার করে বন্ধ করা হয়। বিচার পাওয়া বন্ধ করেছিলেন তারাই। আর এখন তাদের কাছ থেকে বিচার শিখতে হবে? এখন হয়তো তারা বলবেন এটা খন্দকার মোশতাক করেছিলেন। তারা ক্ষমতায় ছিলেন ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত। বার বার তারা (বিএনপি) ক্ষমতায় এসেছিলেন কিন্তু ইনডেমনিটি কিন্তু তোলেন নাই। আর এখন উনারা আইন শেখান। তার কাছ থেকে আমাকে আইন শিখতে হবে..?’

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের ১৮তম (বাজেট) অধিবেশনের বৈঠকে সুপ্রিম কোর্ট জাজেস বিল উত্থাপনের আগে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এরআগে বিএনপি সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ আওয়ামী লীগ সরকারের ঘন ঘন আইন পাসের উল্লেখ করে বলেন, আমি সুপ্রিম কোর্ট জাজেস বিলের বিরোধিতা করছি না। তবে সরকার নিজেদের সুবিধার জন্য প্রায়ই সংসদে বিল পাস করে যাচ্ছে। কিন্তু যেসব আইন হচ্ছে এর বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আইনের ব্যত্যয় ঘটছে। আইনের বৈষম্য ঘটছে। এ সময় পবিত্র কুরআন থেকে ন্যায়বিচার সংক্রান্ত সুরা মায়েদার আয়াত উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, তারা নিজেরা খেয়ালখুশি মতো আইন করেন, কিন্তু আইনের বাস্তবায়ন হয় না। কিছুদিন আগে আমরা দেখলাম জাতীয় সংসদের সদস্য হাজী সেলিম দণ্ডিত হওয়া সত্ত্বেও চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তিনি আইন মেনেই গেছেন। অথচ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিদেশে চিকিৎসার জন্য বারবার আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি, আদালত বলেছে এ ধরনের কোনো সুযোগ নেই। এখানে আইনের বৈষম্য করা হয়েছে। এ সময় হারুণ আরও বলেন, আমরা দেখছি সরকারি দলের কর্মসূচি পুলিশের প্রহরায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কিন্তু বিরোধী দলকে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না। এখানে আইনের শাসন বলে কিছু নেই। তাহলে এই আইন করে কি লাভ। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ঘটনা ঘটেছে একটি সভ্য রাষ্ট্রে এ ধরনের ঘটনা কীভাবে ঘটে। প্রতি-উত্তরে সংসদে দাঁড়িয়ে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ যে কথা বললেন, তার কথা শুনে হাসব না কাঁদব এটা আমি বুঝতে পারছি না। এর কারণ তিনি যে জ্ঞান দিলেন তাতে আমি বুঝে উঠতে পারছি না-আমি আইন সম্পর্কে কিছু বুঝি কিনা। আইন সম্পর্কে বিএনপির আমলে যা হতো তাতে তার নিজেরই বোধদয় হওয়া উচিত। আইনমন্ত্রী বলেন, এখন বলতে পারি জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর ১৫ই আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়েছে, জেলহত্যার বিচার চলছে। আর সাহস করে বিচারপতিরা এই বিচার করায় আজ তাদের  বেতন-ভাতা বৃদ্ধির আইন করা হচ্ছে। আর আপনারা আইন শেখাচ্ছেন। মাননীয় স্পিকার আমাকে বিএনপির কাছ থেকে আইন শিখতে হবে? এর পরে আইনমন্ত্রী সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর