শুক্রবার, ১০ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়া

বিশেষ বরাদ্দ না পাওয়ায় হতাশ রংপুর চেম্বার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

প্রস্তাবিত বাজেটকে ব্যবসা ও শিল্প সহায়ক বলে মনে করলেও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া রংপুর অঞ্চলের দারিদ্র্য নিরসন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কোনো পদক্ষেপ না থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। পোশাক ও কৃষিভিত্তিক শিল্পজোন গড়ে তোলার পাশাপাশি উন্নয়নবৈষম্য দূরীকরণে রংপুর বিভাগের আট জেলার উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ রাখার পাশাপাশি এ বিভাগের শিল্পায়নে আলাদা ঋণ, কর ও ভ্যাটনীতি প্রণয়ন, রংপুরে প্রস্তাবিত স্পেশাল ইকোনমিক জোন ও উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের স্বার্থে ‘নর্থ বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট মিনিস্ট্রি’ গঠনের মতো বিষয়গুলো বাজেটে অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত ছিল বলে রংপুর চেম্বার মনে করে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে, বাজেটে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া রংপুর বিভাগের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়নের জন্য তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা ও অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব না থাকায় রংপুর চেম্বার হতাশ। তাই রংপুর অঞ্চলের দারিদ্র্য নিরসন ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে রংপুর চেম্বারের প্রস্তাবগুলো সংশোধিত বাজেটে অন্তর্র্ভুক্ত করার জন্য রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি আকর্ষণ করে এক বিজ্ঞপ্তিতে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এমন মন্তব্য করেছেন।

সংগঠনটির সভাপতি এ বাজেট কর্মসংস্থানমুখী ও মূল্যস্ফীতি রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন। তিনি বাজেট বাস্তবায়নে দুর্নীতি প্রতিরোধ, অর্থ পাচার রোধ এবং প্রবৃদ্ধির সুফল যেন সুষমভাবে বণ্টন হয় সেদিকে নজর দেওয়ার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

তিনি বলেন, এ ছাড়া ব্যাপক কর্মসৃজনের লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ, নিত্যপণ্যের দামে লাগাম টানতে এবং উৎপাদন ব্যয় কমাতে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি, নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় ভর্ভুকি প্রদানের মতো বিষয়গুলো অন্তর্র্ভুক্ত থাকায় অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করবে বলে প্রস্তাবিত বাজেট সময়োপযোগী।

প্রস্তাবিত বাজেটের ঘাটতি মেটাতে সরকারের ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়ার যে প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে মন্তব্য করে তিনি ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাতের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বৈদেশিক উৎস, অবকাঠামো তহবিল, অবকাঠামো বন্ড ও অন্যান্য আর্থিক উপাদানের ওপর জোর দেওয়ার অনুরোধ জানান। কেননা বেসরকারি খাত বাধাগ্রস্ত হলে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ায় উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ করদাতারা অস্বস্তিতে পড়বেন বলে রংপুর চেম্বার মনে করে।

প্রস্তাবিত বাজেটে স্বল্প আয়ের ব্যবসায়ীদের জন্য থোকভিত্তিক কর ব্যবস্থা প্রবর্তন করা, আয় অনুসারে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করে পৃথক করকাঠামো গঠন এবং আয় অনুসারে কর ছাড়ের বিষয়গুলো অন্তর্র্ভুক্ত থাকার পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা থাকলে নতুন ও তরুণ উদ্যোক্তারা ব্যবসা ও শিল্প স্থাপনে আগ্রহী হতো বলে রংপুর চেম্বার মনে করে। তাই বিষয়টি রংপুর চেম্বারের পক্ষ থেকে সংশোধিত বাজেটে অন্তর্র্ভুক্ত করার অনুরোধ করছি।

প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসী পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বৃদ্ধি করার পাশাপাশি মেড ইন বাংলাদেশ পণ্যে কর অব্যাহতি থাকায় অটোমোবাইল, থ্রি হুইলার, ফোর হুইলার, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, ও হালকা প্রকৌশল শিল্পের বিকাশ ঘটবে বলে রংপুর চেম্বার মনে করে। এ ছাড়া খেলাপি ঋণ কমাতে করারোপ, সমুদ্রগামী জাহাজের আয় করমুক্ত, সব রপ্তানি খাতে একই হারে কর, পাশাপাশি কর জাল বাড়াতেও টিআইএনের (করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর) রিটার্ন জমা স্লিপ বাধ্যতামূলক করার মতো বিষয়গুলো অন্তর্র্ভুক্ত থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি বহুগুণ ত্বরান্বিত হবে বলে রংপুর চেম্বার মনে করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর