বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্য বাজেটের আকার বৃদ্ধি প্রয়োজন

আলোচনা সভায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে স্বাস্থ্য বাজেটের আকার বৃদ্ধি প্রয়োজন বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে যে বাজেট দেওয়া হচ্ছে তা যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘কেমন হলো স্বাস্থ্য বাজেট ২০২২-২৩’ শীর্ষক গোলটেবিল অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তারা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. শামিউল ইসলাম, টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ, মেরিস্টোপসের লিড অ্যাডভোকেসি অফিসার মনজুন নাহার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলসহ অন্যান্য সদস্য।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনা প্রতিরোধে হেলথের ব্লক ফান্ড গত বছর ১০ হাজার কোটি টাকা ছিল। সেটা এবার কমে ৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের মোট বাজেট আসলে ৪০ হাজার কোটি টাকা হবে। কারণ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ও স্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্ট অনেক কাজের সঙ্গে জড়িত।

বাজেট বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিছুটা পিছিয়ে স্বীকার করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজের সমন্বয় করায় সময় বেশি লাগে। এর ফলে বাজেটের কিছুটা অংশ থেকে যায়। প্রতিটি ক্রয় কার্যক্রমে আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় নিতে হয়। এতে সময় লাগে। আমাদের প্রক্রিয়াগুলো লম্বা, ঠিকাদার নিয়োগসহ নানা কারণে সময় বেশি লাগে। অনেক সময় ঠিকাদাররা কাঁচামালের দাম বাড়া ও কমার সঙ্গে কাজের সময় নির্ভর করে।  অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, কিছু প্রকল্প সম্প্রসারণ ছাড়া স্বাস্থ্য বাজেটে নতুনত্ব নেই। বরাদ্দের বৃদ্ধি মূলত ক্রমবর্ধমান ব্যয় এবং মুদ্রাস্ফীতির ব্যবস্থা মেটাবে। করোনার মতো মহামারি মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও সক্ষমতা বাড়াতে বাজেটে বরাদ্দ নেই। আগের বছরের বাজেটের চেয়ে ৫ থেকে ১০ শতাংশ বাড়িয়ে পরের বছরের বাজেট তৈরি করা হয়েছে।

জনস্বাস্থ্যবিদরা মনে করেন, স্বাস্থ্য খাতে এ বরাদ্দ ১০ শতাংশ হওয়া উচিত। দেশের মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৬৮ শতাংশই আসছে জনসাধারণের পকেট থেকে। এই ব্যয় (আউট অব পকেট) ৫০ শতাংশে আনতে হলে জাতীয় বাজেট ৭ থেকে ৮ শতাংশ বরাদ্দ প্রয়োজন। আসন্ন অর্থবছরের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের বিশ্লেষণে বলা হয়, বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টসের (বিএনএইচএ) ১৯৯৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তথ্যে দেখা যায়, বাংলাদেশের জিডিপির মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম বরাদ্দ নেপালের তুলনায় আমাদের বরাদ্দ ১৩ শতাংশ কম। তাই জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর