সোমবার, ২০ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

দীর্ঘদিন রাসায়নিক পড়ে থাকায় বিস্ফোরণ

সীতাকুন্ড ট্র্যাজেডি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর বিস্ফোরণ এবং ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের অনুঘটক হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের চার দফায় পরিবর্তন হয় জাহাজীকরণের তারিখ। এক মাসেরও বেশি ডিপোতে পড়ে থাকে দাহ্য পদার্থটি। ফলে ঘটে রাসায়নিক বিস্ফোরণের ঘটনা। সংশ্লিষ্টদের দাবি- ডিপোতে দীর্ঘদিন রাসায়নিক থাকার কারণেই অগ্নিকান্ড এবং বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় অর্ধশত মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হন তিন শতাধিক। যথাসময়ে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের চালানটি রপ্তানি করা গেলে এড়ানো যেত ভয়াবহ দুর্ঘটনা। বিএম কনটেইনার ডিপোর প্রধান প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপের জিএম এবং মুখপাত্র শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, ‘মে মাসের শুরুতে রপ্তানির জন্য হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের চালান ডিপোতে আসে। এরপর স্লথ খালি না থাকার অজুহাতে চার বার যাত্রা বাতিল করা হয়। সবশেষে ৩০ মে চালানটি পরিবহনে অপারগতা প্রকাশ করা হয়। শিপিং লাইন কোম্পানি যথাসময়ে চালানটি নিয়ে গেলে হয়তো এ ধরনের ভয়াবহ ঘটনার সৃষ্টি হতো না।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘পুরনো হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের কারণেই আগুন এবং বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। রপ্তানির জন্য দুর্ঘটনার এক মাস আগে ডিপোতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের চালানটি আনা হয়। কিন্তু শিপিং কোম্পানি তা বারবার জাহাজীকরণের সময় পরিবর্তন করেছে। তারা কেন জাহাজীকরণের তারিখ পরিবর্তন করেছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। যথাসময়ে জাহাজীকরণ হলে এ দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।’ অনুসন্ধানে জানা যায়, সীতাকুন্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন এবং বিস্ফোরণের অনুঘটক হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের চালানটি ভিয়েতনামে রপ্তানির উদ্দেশে ২৯ এপ্রিল ডিপোতে আনা হয়। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সিল্যান্ড শিপিংয়ের মাধ্যমে ১ মে তা ভিয়েতনামের উদ্দেশে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্লথ খালি না থাকার অজুহাতে ওই দিনের যাত্রা বাতিল করে শিপিং লাইন।

এরপর ১১, ১৬ এবং ২৬ মে একই অজুহাতে তা বাতিল করা হয়। ৩০ মে বিএম কনটেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষকে ওই চালান বহনে অপারগতা প্রকাশ করে চিঠি দেয় শিপিং লাইন কর্তৃপক্ষ।

হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের রপ্তানিকারক আল রাজি কেমিক্যাল কমপ্লেক্সের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা দেওয়ান মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘সিল্যান্ড শিপিং লাইনের কনফারমেশন নিয়েই হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের চালান ডিপোতে পাঠানো হয়।

 কিন্তু মাক্স শিপিং লাইন কোনো কারণ না দেখিয়ে চার বার জাহাজীকরণের তারিখ পরিবর্তন করে।

তারা কেন এটা করেছে আমাদের জানা নেই।’

প্রসঙ্গত, ৫ জুন রাতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড এবং বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন ৪৯ জন। এর মধ্যে ১৯ লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।  আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। আহতরা ঢাকা এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর