টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরের সিংহভাগ নিম্নাঞ্চল। জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যাওয়া ভবনে বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে মারা যান দুজন। পাহাড় ধসে এক দিনের মাথায় ফের মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরের। ফলে চট্টগ্রামে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘনঘটা তৈরি হয়েছে। প্রকৃতির ওপর মানুষের অত্যাচারে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বাণিজ্যিক রাজধানী। ডুবছে নগর, বাড়ছে অন্তহীন ভোগান্তি, বাড়ছে লাশ। নগরবাসীর অভিযোগ, প্রকৃতি আপন নিয়মেই চলে। কিন্তু প্রকৃতিকে বিরক্ত করার কারণে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। বার বার মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও লোভাতুরদের শকুনি দৃষ্টি থামছেই না। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নিয়মিত খাল-নালা ও ড্রেন পরিষ্কার করার কথা। কিন্তু কাজটি না করার কারণে জলাবদ্ধতা অভিশাপ হয়েই আছে। ফলে নগরবাসীর কাছে এখন বর্ষা মানেই পাহাড়ধস এবং জলাবদ্ধতার আতঙ্ক। প্রবল বর্ষণে নগরের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়। এর মধ্যে নগরের কাতালগঞ্জ এলাকার আবদুল্লাহ খান লেনের খান হাউস নামের একটি ভবনের নিচ তলাও ডুবে যায়। এ ভবনের নিচ তলায় উঠে যাওয়া পানির মধ্যে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান দুজন। গতকাল সকালে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ওই ভবনের তত্ত্বাবধায়ক আবু তাহের (৬৫) এবং গাড়ি চালক মো. আবুল হাসেম (৩৮)। পাঁচলাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে তিনতলা ভবনটির নিচতলায় পানি উঠে যায়। এ সময় নিচতলার সবাই ওপরে ওঠে যায়। পরে তাহের ও হোসেন আইপিএসের সংযোগ খুলতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হন। তাদের উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। চট্টগ্রাম নগরের চশমা হিলের গ্রিন ভিউ আবাসিক এলাকায় পাহাড় ধসে মো. আবু রায়হান (১২) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোরে এ ঘটনা ঘটে। মো. আবু রায়হান কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ইছাপুর গ্রামের দ্বীন মোহাম্মদের ছেলে। এর আগে গত শুক্রবার গভীর রাতে আকবর শাহ থানা এলাকার দুটি স্থানে পাহাড় ধসে চারজনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে পাহাড় ঘিরে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। তবে রায়হানের পরিবার ও স্থানীয়রা পাহাড় ধসে মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি পুলিশের কাছে যাওয়ার আগেই পরিবার লাশ কুমিল্লা নিয়ে যায়। জানা গেছে, ১২ বছর বয়সী ছেলেটি রাতে তার বাবার দোকান ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। গত কয়েক দিনে বৃষ্টিতে নরম হয়ে যাওয়া পাহাড়ের মাটি ধসে দোকানের ওপর পড়লে তার মৃত্যু হয়। চকবাজার এলাকায় অটোরিকশা চালক আবুল কালাম বলেন, বৃষ্টি হলেই এই এলাকায় পানি জমে যায়।
পানি জমলে গাড়ি চালানো যায় না। বর্ষা শুরুর পর থেকেই এমন অবস্থায় আছি।