ডাকাতদের তৎপরতা কমাতে দেশের বিভিন্ন এলাকার ডাকাত দলের সরদারদের গ্রেফতার করছে পুলিশ। পাশাপাশি এ বিষয়ে পুলিশ খুব তৎপর হওয়ায় রাজধানীতে কমে গেছে ডাকাতি। তবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা ও বর্ষা ঘিরে আবারও ডাকাতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে উত্তরখানের একটি বাসায় ডাকাতির ঘটনায় চার আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার এ আশঙ্কার কথা জানান। ডিবি-প্রধান হাফিজ আক্তার বলেন, ‘ডাকাতরা এখন অনেক কৌশলী। তারা জানে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের সন্ধান পেয়ে যাব। তাই তারা ডাকাতির সময় কোনো ডিভাইস ব্যবহার করে না। তবে আমরাও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তাদের গ্রেফতার করছি। তবে যেহেতু বর্ষাকাল ও বন্যা হচ্ছে, এতে আরও ডাকাতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট আছি। বাসে ডাকাতি হওয়াকে কেন্দ্র করে আমরা প্রচুর ডাকাত গ্রেফতার করেছি। ফলে মে মাসে ডাকাতির কোনো মামলা হয়নি এবং বাসেও ডাকাতি দেখা যায়নি।’ উত্তরখানে ডাকাতির বিষয়ে অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার জানান, এপ্রিলে উত্তরখানে একটি বাসায় ডাকাতি হয়েছিল। ডাকাত দল ওই বাসা থেকে ৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা, সোনার অলংকারসহ মোট ৮ লাখ ৩৭ হাজার ৭৫০ টাকা লুটে নেয়। এ ঘটনায় বাসার মালিক আহসান উদ্দিন বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পর ডিবি উত্তরা বিভাগ তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে সোমবার গাজীপুরের নোয়াগাঁও থেকে এ ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- জাকির হোসেন, সবুজ, ওমর ও ওসমান গনি স্বপন। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি সোনার চেন, ১৪ হাজার টাকা, একটি চাপাতি, দুটি লিভার, দুটি সেলাই রেঞ্জ, একটি স্ক্রু ডাইভার ও একটি চাকু জব্দ করা হয়। তাদের সবার বাড়ি দক্ষিণবঙ্গে। তারা ঢাকার আশপাশে ডাকাতি করে পালিয়ে যেত। এদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

বাস ডাকাতির বিভিন্ন ঘটনায় কতজন গ্রেফতার হয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি-প্রধান বলেন, এখন পর্যন্ত শতাধিক ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর জানা গেছে, এরা সারা দিন ফুডপান্ডায় ডেলিভারি করে বা ভ্যান চালায়। আর রাতে ডাকাতি করে বেড়ায়। ডিবির উত্তরা বিভাগের এডিসি মো. কায়সার রিজভী কোরায়েশী জানান, ৪ এপ্রিল রাতে গ্রিল কেটে ডাকাত দল তুরাগ নদ লাগোয়া উত্তরখানের ওই বাড়িতে প্রবেশ করে। অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে নগদ টাকা ও সোনার অলংকার নিয়ে যায়। তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেলেও বাড়ির পাশের জঙ্গলে ফেলে যায়। ডাকাতরা গামছা দিয়ে মুখোশ পরেছিল, একজন ছিল মাস্ক পরা। গ্রেফতার চারজনের মধ্যে ওমর উত্তরখানের ওই বাড়িতে ডাকাতি করার পর আরেকটি ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। ডাকাতরা কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার না করায় ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে অনেকটা বেগ পেতে হয়।