বুধবার, ২২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

সিট বাণিজ্যে ছাত্রলীগ জিম্মি রাবি প্রশাসন

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

সিট বাণিজ্যে ছাত্রলীগ জিম্মি রাবি প্রশাসন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্যে জিম্মি হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নেতাদের কারণে হলের দায়িত্ব স্বাধীনভাবে পালন করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন অন্তত পাঁচটি হলের প্রাধ্যক্ষরা। নানাভাবে তারা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কাছে লাঞ্ছিত হচ্ছেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে প্রাধ্যক্ষরা এ পদে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রাধ্যক্ষরা বলেন, তারা চান, বৈধ শিক্ষার্থীরা হলের নানা সুযোগ-সুবিধা পাক। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশে নিজেদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বাধ্য করে। না হলে বিভিন্নভাবে প্রাধ্যক্ষদের অসম্মানিত হতে হয়। এসব ঘটনায় নানাভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিজ্ঞতা প্রায় সব হল প্রাধ্যক্ষের আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক ও তাপসী রাবেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌসি মহল বলেন, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভা হয়েছে। ওই সভায় প্রাধ্যক্ষরা তাদের মতামত রেখেছেন। তারা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানাবেন।        বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো এখন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের কাছে পুরোপুরি জিম্মি। ছাত্রলীগ নেতাদের দাপটে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যার ফলে অসহায় হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আবাসিক হলে এখন সিট পাওয়া একেবারে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। হলে একটি সিট পেতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে না গিয়ে এখন ধরনা দিতে হচ্ছে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের কাছে। এ জন্য প্রতি সিটের বিপরীতে ছাত্রলীগ নেতাদের দিতে হচ্ছে ৫-৭ হাজার টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো এখন ছাত্রলীগের আয়ের অন্যতম উৎস। প্রতিমাসে প্রতিটি হল থেকে প্রায় লাখ টাকার অধিক সিট বাণিজ্য হচ্ছে। করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর এ রকম কর্মকান্ড শুরু করেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।

 পরবর্তীতে গত মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হল কমিটি হওয়ার পর চরম আকার ধারণ করেছে এসব ঘটনা। ছাত্রলীগের অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধ করতে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুকে নিয়ে হল নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার সভা করেও কোনো সমাধানে আসতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘আমার জানা মতে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মী হলের সাধারণ কোনো শিক্ষার্থীকে নামিয়ে দেয়নি। তবে এ রকম কোনো অভিযোগ প্রমাণ হলে, সেই নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া গেটে তালা দেওয়া কিংবা অন্য দু-একটা যে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে, তা হল প্রশাসন বসে ব্যবস্থা নেবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর