বুধবার, ২২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে দিনভর পানি দিনভর ভোগান্তি

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে দিনভর পানি দিনভর ভোগান্তি

সামান্য বৃষ্টি হলেই ডুবে যায় চট্টগ্রামের বেশির ভাগ এলাকা। গতকালের ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকার একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার অপারেশনস ডা. হামিদ হোছাইন আজাদ। সোমবার রাত ১১টায় কর্মস্থল থেকে বের হন বহদ্দারহাট খাজা রোডের বাসায় যেতে। ২০ মিনিট সময়ের এ পথ যেতে লেগেছে দুই ঘণ্টা। ডা. হামিদ হোছাইন আজাদ বলেন, প্রতিদিন অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় যেতে সময় লাগে মাত্র ২০ মিনিট। সোমবার লেগেছে দুই ঘণ্টা। কেবল জলাবদ্ধতার কারণে এমন মাত্রাতিরিক্ত ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছি। এর আগের দিন ছিলাম বাসাবন্দি। এভাবে কেবল তিনি নন, নগরের অধিকাংশ মানুষকে এখন জলাবদ্ধতার চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। কোথাও দিনভর পানি, কোথাও তিন-চার ঘণ্টা পর নামছে পানি, কোথাও পানি নামলেও মুখোমুখি হতে হয়েছে পানি পরবর্তী সমস্যায়। ফলে নাভিশ্বাস উঠছে জনজীবনে। দিনভর পানি দিনভর ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। জানা যায়, বৃহস্পতিবার থেকে চট্টগ্রামে কখনো থেমে থেমে, কখনো মুষলধারে বৃষ্টি হয়। বৃষ্টিতে নগরের অধিকাংশ নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।

 শনিবার থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিমের বহদ্দারহাট এলাকার বহদ্দার বাড়ির বাসভবনের নিচতলা, বাসার সামনের গলি ও সড়কও ছিল পানির নিচে। গতকালও তার বাসা থেকে পানি নামেনি। ফলে মেয়র সকালে নগর ভবনে যাননি। এ ছাড়া বৃষ্টি থেমে থেমে পড়ছে। বিভিন্ন এলাকায় দিনভর পানি জমে থাকে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জোয়ারের পানি। ফলে কিছু এলাকায় পানি আরও বাড়তে থাকে। কিছু এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে ব্যবহার করেছেন নৌকা। টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে নগরীর খাল-নালা ও সড়ক উপচে পানি ঢুকেছে বাসা-বাড়ি, দোকান, মার্কেট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এর মধ্যে শনিবার থেকে আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক এলাকা, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, হালিশহর, চকবাজার, বাদুরতলা, কাগাসগোলা, রহমতগঞ্জ, তিন পুলের মাথা, ওয়াপদা, শান্তিবাগ, আনন্দবাজার, কাট্টলীর বিভিন্ন অংশ, ফইল্যাতলি, বাকলিয়ার বিভিন্ন এলাকা, শুলকবহর, মুরাদপুরসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।

চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও জলাবদ্ধতা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী বলেন, কয়েকদিনের বর্ষণে নগরের অনেক এলাকা তলিয়ে যায়। শুরু থেকে চসিকের একাধিক টিম খাল ড্রেন ও নালা-নর্দমা পরিষ্কারে কাজ করছেন। এখনো কাজ করছেন। এখন অনেক এলাকার পানি নেমে গেছে।

প্রসঙ্গত, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পে ব্যয় হয় ২ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় নগরীর বিভিন্ন খালের ভিতরের অংশে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে জলকপাট ও প্রতিরোধ দেওয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খাল সংস্কার-উন্নয়ন করা হচ্ছে। এর বাইরে আরও ২১টি খাল আছে। এসব খাল চসিক নিয়মিত পরিষ্কার করার কথা থাকলেও তা হয় না। ফলে এগুলো বেদখল ও ভরাট হতে চলেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়েছে চসিক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর