বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব ঘাটতি ১৬৪৫ কোটি

বেনাপোল প্রতিনিধি

দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। এ সময় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ হাজার ২৪৫ কোটি  টাকা। আদায় হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। তবে অর্থবছরের শেষ দিকে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হওয়ার  সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় রাজস্ব বোর্ড থেকে নতুন করে ৫ হাজার ১৫৮ কোটি  টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়। সে হিসেবে রাজস্ব ঘাটতি ৫৫৮ কোটি টাকা। এ বন্দরের রাজস্ব ঘাটতি দিন দিন বেড়েই চলছে। ভারতের পেট্রাপোলের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বন্দর-কাস্টমসের বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক কর্মকতাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে এমনটা হচ্ছে বলে মনে করেন বন্দর-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে সপ্তাহে সাত দিনে ২৪ ঘণ্টা বাণিজ্যসেবা। এতে সরকারের যেমন রাজস্ব আয়ে ভাটা পড়েছে, তেমনি লোকসান গুনছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছু অসৎ ব্যবসায়ী আমদানিকৃত পণ্যের  শুল্ক ফাঁকি দিতে না পেরে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনারের নামে বিভিন্ন জায়গায় বেনামি অভিযোগ দিয়ে একের পর এক তাকে হয়রানি করছে। এ কারণে এ বন্দর দিয়ে বাণিজ্যিক আমদানিকারকরা হয়রানির ভয়ে পণ্য আমদানি করছে না। বৈধ সুবিধা দেওয়া ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। আর প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলছেন, অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে তারা সমন্বয় করে কাজ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, সব বন্দরে আমদানি পণ্যের ওপর রাজস্ব পরিশোধের নিয়ম এক হতে হবে। বন্দরের ধারণক্ষমতা ৫০ হাজার মে. টন, কিন্তু এখানে সব সময় পণ্য থাকে প্রায় দেড় লাখ মে. টন। জায়গার অভাবে পণ্য খালাস করতে না পেরে ভারতীয় ট্রাক বন্দরে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকছে। খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে মূল্যবান পণ্যসামগ্রী পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বৈধ সুবিধা পেলে এ বন্দর থেকে বর্তমানে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পাচ্ছে তখন তার দ্বিগুণ আয় হবে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, পণ্য চালান খালাসে আগের চেয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বেড়েছে কাস্টমসে। শুল্ক ফাঁকি বন্ধে কড়াকড়ি আরোপ করায় কিছু ব্যবসায়ী এ বন্দর দিয়ে আমদানি কমিয়েছেন। বিশেষ করে রাজস্ব বেশি আসে এমন পণ্য কম আমদানি হচ্ছে। এতে রাজস্ব কিছুটা ঘাটতি হয়েছে। তবে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন তা পূরণের। শুল্ক ফাঁকির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। ব্যবসায়ীদের বৈধ সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে তারা আন্তরিক হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর