মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলে নতুন নীতিমালা

নিজস্ব প্রতিবেদক

খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলে নতুন নীতিমালা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো ও নগদ এককালীন জমা দেওয়ার হার কমিয়ে ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক ‘ঋণ পুনঃতফসিলিকরণ ও পুনর্গঠন’ সংক্রান্ত এ ‘মাস্টার সার্কুলার’ জারি করে সব ব্যাংকে পাঠিয়েছে। নীতিমালায় নতুন করে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে কভিড মহামারির প্রভাব ও যুদ্ধ পরিস্থিতিকে কারণ হিসেবে বলা হয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা ছাড় পাবেন এবং খেলাপি ঋণ কমে আসবে। ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে পুনঃতফসিলের এ নীতিমালা এমন সময় করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন উচ্চহারের খেলাপি ঋণসহ আর্থিক খাতের সংস্কার ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে বাংলাদেশ সফর করছে আইএমএফের প্রতিনিধি দল।

দলটি গত দুই দিনে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের সঙ্গে বৈঠক করেছে। আজ নতুন গভর্নরের সঙ্গে বৈঠকের সূচি রয়েছে।

নতুন এ নীতিমালায় ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে ঋণ পুনঃতফসিলিকরণে গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ সময়সীমা যেমন বাড়ানো হয়েছে, তেমনি ঋণ পুনঃতফসিলিকরণের ক্ষেত্রে ন্যূনতম নগদ ডাউনপেমেন্টের হার কমানো হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালক মাকসুদা বেগম স্বাক্ষরিত সার্কুলারে বলা হয়েছে।

নতুন নীতিমালায় তিনবারের পরিবর্তে চারবার ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ রাখা হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়, মেয়াদি ঋণের বেলায়- স্থিতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার কম হলে গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ছয় বছর পর্যন্ত পুনঃতফসিল করা যাবে। স্থিতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি ও ৫০০ কোটি টাকার কম হলে গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত পুনঃতফসিল করা যাবে। স্থিতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হলে গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ আট বছর পর্যন্ত পুনঃতফসিল করা যাবে।

এর আগে মেয়াদি ঋণ সর্বোচ্চ ছয় বছর পর্যন্ত পুনঃতফসিল করা যেত।

চলমান ও তলবি ঋণের বেলায়-স্থিতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকার কম হলে গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত পুনঃতফসিল করা যাবে। স্থিতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকার বেশি ও ৩০০ কোটি টাকার কম হলে গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ছয় বছর পর্যন্ত পুনঃতফসিল করা যাবে। স্থিতির পরিমাণ ৩০০ কোটি টাকার বেশি হলে গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত পুনঃতফসিল করা যাবে। এতদিন চলমান ও তলবি ঋণ ২ বছর ৩ মাস পর্যন্ত পুনঃতফসিল করা যেত।

এককালীন পরিশোধের হার কমেছে : মেয়াদি ঋণের বেলায়- স্থিতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার কম হলে ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ৭ শতাংশ অথবা মোট বকেয়া ঋণের সাড়ে ৪ শতাংশ, যেটা কম তা ন্যূনতম ডাউনপেমেন্ট হিসেবে ধরা হবে। স্থিতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি ও ৫০০ কোটি টাকার কম হলে ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ৬ শতাংশ অথবা মোট বকেয়া ঋণের সাড়ে ৩ শতাংশ যেটা কম তা ন্যূনতম ডাউনপেমেন্ট হিসেবে ধরা হবে। স্থিতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হলে ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ৪ শতাংশ অথবা মোট বকেয়া ঋণের আড়াই শতাংশ যেটা কম তা ন্যূনতম ডাউনপেমেন্ট হিসেবে ধরা হবে।

আগের নিয়মে ন্যূনতম ডাউনপেমেন্ট হিসেব করার ক্ষেত্রে ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির ১৫ শতাংশ অথবা মোট বকেয়া ঋণের ১০ শতাংশ যেটা কম সেটা ডাউনপেমেন্ট হিসেবে ধরা হতো।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর