শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

৫০ বছরে ঢাকার উন্নয়নে কোনো পরিকল্পনা হয়নি : শেখ তাপস

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, গত ৫০ বছরে ঢাকার উন্নয়নে কোনো পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি; যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা শুধু রুটিনওয়ার্ক করেছেন। রাজউক বা অন্যান্য উন্নয়ন সংস্থাগুলোর নেওয়া পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছেন। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের মানিক মিয়া মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘রাজধানীর উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক নগর সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন, একটি রাজধানী হিসেবে যেমন পরিকল্পনা নেওয়ার কথা ছিল, সেটা নেওয়া হয়নি। যেখানে পরিকল্পনাই নেই, সেখানে বাস্তবায়নের প্রশ্নই আসে না। তারপরও কিছু কিছু পরিকল্পনা যেগুলো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর মহাপরিকল্পনা নিয়ে, কীভাবে সেটি বাস্তবায়ন করব, সেদিকে নজর দিয়েছি।

আমরা সে লক্ষ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক পরিকল্পনা সাজাচ্ছি। আমরা মৌলিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছি। প্রত্যেক ওয়ার্ডে একটি খেলার মাঠ, বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র, সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র ও একটি করে কাঁচা বাজার স্থাপন করব। ইতোমধ্যে আমরা বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র ২৪টি থেকে ৫৬টিতে উন্নীত করেছি।

জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে মেয়র তাপস বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে বছরের প্রথম দিন থেকে কাজ করছি। খাল ও ড্রেন সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের পর খাল ও ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে। আর জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে আমরা কাজ করছি। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ৭০ শতাংশ জলাবদ্ধতা কম হয়েছে। আর ৩০ শতাংশ আধা ঘণ্টার মধ্যে পানি নিষ্কাশন করতে সক্ষম হই।

তিনি বলেন, রাজধানীতে ২৬টি সেবা সংস্থা রয়েছে। বিগত বছরগুলোতে সংস্থাগুলো বর্ষা মৌসুমে রাস্তা কাটাকাটি করত। এবার কোনো সংস্থাকে  বর্ষা মৌসুমে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির অনুমতি দিইনি। অনেক জায়গা থেকে তদবির হয়েছে, কোনো লাভ হয়নি। যেটুকু কাজ হচ্ছে সেটি আমাদের নিজস্ব অবকাঠামো নির্মাণের কাজ।

সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া বলেন, ঢাকায় জনসংখ্যার চাপ যদি কমানো যায় তাহলে বাকি কাজগুলো সহজ হয়ে যাবে। যেমন, ঢাকার আশপাশের মানুষ যদি প্রতিদিন ঢাকায় এসে কাজ করে আবার নিজ এলাকায় ফিরে যায়, তাহলে চাপ অনেক কমবে। এ লক্ষ্যে আমরা ৩টি সংযোগ সড়ক যথাক্রমে এয়ারপোর্ট, ৩০০ ফিট, মাদানী এভিনিউ এই তিনটি পয়েন্ট স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছি। এটি বাস্তবায়িত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো হবে।

সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নগর পরিকল্পনাবিদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ।

নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পালের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নিলীমা আখতার, রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ ও ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি ফজলে রেজা সুমন, এলআইইউপিসি প্রকল্প পরিচালক ইয়োগেশ প্রদানাং, ইনিস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) সম্মানী সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন (শীবলু), স্থপতি ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ সাধারণ সম্পাদক ফারহানা শারমিন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সোহেল মামুনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সহসভাপতি খালিদ সাইফুল্লাহ,  যুগ্ম সম্পাদক ফয়সাল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান ইমন প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর