পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে ফেরদৌস আহমেদ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রবিবার মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বেগুন টিউরী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সিআইডি বলছে, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার একই এলাকার বাসিন্দা মালেকা আক্তার ও ফেরদৌস আহমেদ। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক থাকার পরে ২০১৪ সালে তারা বিয়ে করেন। তাদের পাঁচ বছরের একটি সন্তানও রয়েছে। এরই মধ্যে দুই বছর আগে পিংকী নামে এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরে ফেরদৌস। এটাকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহ লেগে থাকত মালেকা ও ফেরদৌসের মধ্যে। গত ১৯ জুলাই অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে লাথি মেরে হত্যা করেন ফেরদৌস।
এ ঘটনায় পরদিন মালেকা আক্তারের ভগ্নিপতি তোতা মিয়া সাটুরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।গতকাল রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করলে এ বিষয়ে ছায়া-তদন্ত শুরু করে সিআইডি। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ফেরদৌস।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তা ধর বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে ফেরদৌস সাত মাস আগে মালেকাকে তালাক দেন। তালাকের এক মাস পর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় পুনরায় মালেকা আক্তারকে বিয়ে করে সংসার করতে থাকেন। ইতোমধ্যে মালেকা আক্তার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু ফেরদৌসের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক বজায় থাকায় তাদের মধ্যে আবারও দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। গত ১৯ জুলাই রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় একই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আবারও কলহের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ফেরদৌস অন্তঃসত্ত্বা মালেকার পেটে লাথি, ঘুসি মারলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে ফেরদৌস চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর বাড়ির লোকজন তাদের কোনো সাড়া না পেয়ে ঘরে গিয়ে মালেকা বেগমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তারা স্থানীয় পল্লী চিকিৎসককে ডেকে এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান। পরে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।