শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

নির্বাচনকালীন সরকারের কাজ সুনির্দিষ্ট করার দাবি সিপিবির

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনের এবারের সংলাপেও অংশ নেয়নি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। গতকাল পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিবি নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচন কমিশনের এ মতবিনিময় ‘নিছক অন্যদের কথা শোনা ও নিজেদের কথা গেলানোর চেষ্টা’ ছাড়া কিছুই নয়। সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা না থাকায় এ মতবিনিময় বিশেষ কোনো ফল আনবে না। সংবাদ সম্মেলনে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনকালীন তদারকি সরকারের কাজ সংবিধানে সুনির্দিষ্ট করে দেওয়াসহ নির্বাচনব্যবস্থায় বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরে দলটি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিপিবি সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স। বক্তব্য দেন সিপিবি সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ্ আলম ও সহসাধারণ সম্পাদক কমরেড মিহির ঘোষ। এ সময় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সিপিবি নেতৃবৃন্দ বলেন, এখনকার বাস্তবতায় দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সম্ভাবনা নেই। নির্বাচনকালীন সরকার যেন কোনোভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেজন্য সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকা অপরিহার্য। এজন্য নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সরকারের কাজ সংবিধানে সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান যুক্ত করা, নির্বাচনী বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়াসহ বিধি লঙ্ঘনের জন্য নির্বাচন বাতিল এবং আইন লঙ্ঘনকারীদের আটক ও কারাদণ্ড প্রদানের ক্ষমতা থাকতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী হতে হলে তাকে কমপক্ষে তিন বছর দলের সদস্যপদ নিয়ে এবং জনগণকে অবহিত রেখে দলের কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে হবে।

 স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতাকারী হলে, নিজে অথবা পরিবারের কেউ ঋণখেলাপি কিংবা ঋণখেলাপির জামিনদার হলে, কালো টাকার মালিক হলে, সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ অথবা চাকরিচ্যুতির তিন বছর অতিক্রম না করলে কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রেও এ বিধি প্রযোজ্য হবে। সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা প্রবর্তন, প্রার্থীর প্রচারের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের নেওয়া, ‘না’ ভোট, জনপ্রতিনিধি প্রত্যাহারের বিধান, নির্বাচন টাকা-পেশিশক্তি, প্রশাসনিক কারসাজি, সাম্প্রদায়িক প্রচারণা মুক্ত করার দাবি জানায় সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- বাংলাদেশে ব্যবহৃত ইভিএমে কোনো ধরনের জালিয়াতি বা আপত্তি উঠলে ভোট পুনর্গণনার সুযোগ নেই। ইভিএম মেশিন ব্যবহারে অধিকাংশ অংশীজন একমত হননি। অথচ নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণপত্রে বলা হয়েছে, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিমালা রয়েছে, যা সময়ের সঙ্গে সংশোধন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় ইভিএমসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের এসব কথার মধ্য দিয়ে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিমালা পর্যাপ্ত ও ইভিএম মেশিনের ব্যবহারকে প্রশ্নাতীত করে তোলা হয়েছে। এ মতবিনিময় ‘নিছক অন্যদের কথা শোনা ও নিজেদের কথা গেলানোর চেষ্টা’ ছাড়া কিছুই নয়। এজন্যই তাঁরা মতবিনিময়ে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর