সোমবার, ১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

রাজধানীজুড়ে তীব্র যানজট

সড়কে যত্রতত্র ডাইভারশনের কারণে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে গতকাল রাজধানীর প্রতিটি সড়কে যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। এতে নগরীর বিভিন্ন সড়কে যানজট তৈরি হয়। বিশেষ করে খিলক্ষেত থেকে উত্তরা হয়ে টঙ্গী সড়কের দুই পাশে তীব্র যানজট ছিল দিনভর। এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর সড়কে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় সড়কে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একই সঙ্গে সড়কে যত্রতত্র ঘন ঘন ডাইভারশনের কারণে যাতায়াত ব্যবস্থা হযবরল দেখা গেছে। গতকাল সকালে বিমানবন্দর সড়কে তীব্র যানজট লেগে যায়। উত্তরা থেকে খিলক্ষেত, বনানী হয়ে যানজট ছড়িয়ে পড়ে কারওয়ানবাজার পর্যন্ত। উল্টো দিকে জাহাঙ্গীর গেট থেকে বনানী পর্যন্ত ছিল প্রচন্ড যানজট। এ সময় কিছুটা থেমে থেমে গাড়ি চলাচল করলেও সড়কে যাতায়াতকারীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এ ছাড়া কুড়িল বিশ্বরোড-রামপুরা রোডে যাতায়াতকারীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হয়। যানজটের কারণে দিনের প্রথমার্ধে অফিসগামী মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়। যানজটের কারণে অতিষ্ঠ যাত্রীদের অনেকেই বাস থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন। ফুটপাতগুলো বেদখল থাকায় হাঁটতেও তাদের বেগ পেতে হয়। ভুক্তভোগী কর্মব্যস্ত মানুষ জানান, যানজটে সড়কে আটকে থাকার কারণে তারা সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি। একই সঙ্গে খিলক্ষেত থেকে উত্তরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে ডাইভারশন থাকায় যানজট দেখা যায়। এয়ারপোর্ট এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় সড়ক সংকীর্ণ করে রাখা হয়েছে। দুই পাশে একটি করে বাস চলাচলের উপযোগী রাস্তা রয়েছে।

সড়কটি সংকীর্ণ হওয়ায় এ এলাকায় যানজট বেশি তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। প্রকল্পটির অনেক কাজই এখনো বাকি। অথচ মাঝ রাস্তায় বিআরটির পৃথক লেন করা হচ্ছে দুই পাশের প্রতিবন্ধকতা না সরিয়েই। ফলে যান চলাচলের পথ সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে তীব্র হয়েছে যানজট। কুড়িল থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত ১৫/২০ মিনিটের রাস্তা পেরোতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে গতকাল। 

এ প্রসঙ্গে টঙ্গীর কলেজ গেটের বাসিন্দা মো. তারেক বলেন, স্বাভাবিক সময় টঙ্গী কলেজ গেট থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক পর্যন্ত আসতে সময় লাগে আধা ঘণ্টা। কিন্তু আজ আসতে সময় লেগেছে তিন ঘণ্টা। রাতে বাসায় ফিরতে সময় লাগছে সাড়ে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা। সকালে কোনো দিন ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা এবং কোনো দিন কিছুটা কম সময় লাগছে। তিনি আরও বলেন, এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর সড়কে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলায় যানজট তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে উত্তরা থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত সড়কটি সংকীর্ণ হওয়ায় যানজট বেশি তৈরি হচ্ছে। এটুকু রাস্তা পার হতে সময় লাগছে ১ ঘণ্টারও বেশি।

সকাল সোয়া ৮টায় গাজীপুর থেকে সাইনবোর্ডগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে কথা হয় রুম্মান নামে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তিনি জানান, টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে খিলক্ষেত আসতে সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট। অন্য সময় লাগে ৪০ মিনিট।

কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী জহির জানান, দুই দিন ধরেই অফিসে যেতে দেরি হচ্ছে। আজও রাস্তায় প্রচন্ড যানজট। গাড়ি চলেই না। তাই হেঁটেই অফিসের দিকে রওনা হয়েছেন তিনি। 

যানজটে অফিসগামী ও সাধারণ মানুষসহ রাস্তায় হেঁটে যাতায়াতকারী যাত্রীদের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। বাড়তি মানুষের চলাচলের কারণে রাজধানীর সড়কের যানজট আরও বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। রাজধানীর মহাখালী, সাতরাস্তা, বিজয় সরণি, বাংলামোটর, শাহবাগ, মতিঝিলসহ বিভিন্ন স্থানে অন্যান্য দিনের চেয়ে যানজট তীব্র দেখা যায়। যানবাহন নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই ট্রাফিক পুলিশকে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। এসব এলাকায় সিএনজি, প্রাইভেটকার, রিকশায় পুরো রাস্তাই বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ সময় পরপর সিগন্যাল ছাড়ে, তবে সেই সঙ্গে গাড়ির লাইনও আরও দীর্ঘ হয়। যানজটের মধ্যেও চালকদের আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতা যানজটকে আরও তীব্র করছে।

সর্বশেষ খবর