বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

লঞ্চের ভিতর জিনের বাদশাকে ঘুম পাড়িয়ে খুন করেন সাবেক স্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

লঞ্চের ভিতর জিনের বাদশাকে ঘুম পাড়িয়ে খুন করেন সাবেক স্ত্রী

প্রতিশোধ নিতেই জিনের বাদশা বলে পরিচয় দেওয়া সাবেক স্বামী জাকির হোসেন বাচ্চুকে (৩৮) এমভি গ্রিনলাইন-৩ লঞ্চের মাস্টার কেবিনে ঘুম পাড়িয়ে হত্যা করেন আরজু আক্তার। পারিবারিক কলহ ও বাচ্চুর একাধিক নারীর সঙ্গে পরকীয়া থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাণ্ড করেন তিনি। হত্যার আগে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বাচ্চুকে অচেতন করেন। তারপর শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ঢাকার সাভার থানার নবীনগর থেকে সাবেক স্বামীকে হত্যার অভিযোগে আরজুকে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআই বলছে, প্রতারণা করাই ছিল বাচ্চুর পেশা। তিনি জিনের বাদশা পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতেন। এই পরিচয়েই দুই বছর আগে আরজুর সঙ্গে পরিচয় হয় বাচ্চুর। এরপর প্রেম ও পরবর্তীতে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। আরজুকে দিয়ে প্রতারণার কাজ করাতেন বাচ্চু। এরপর পারিবারিক কলহের জেরে পাঁচ মাস আগে তাদের বিচ্ছেদ হয়। কিন্তু তাদের শারীরিক সম্পর্ক অব্যাহত ছিল। বিচ্ছেদের ক্ষোভ, একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক- এসব কারণেই প্রতিশোধ নিতে বাচ্চুকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআইকে জানিয়েছেন আরজু। গত ২৯ জুলাই রাতে সদরঘাটে থাকা এমভি গ্রিনলাইন-৩ লঞ্চের মাস্টার কেবিনের ভিতর খাটের নিচ থেকে বাচ্চুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের প্রথম স্ত্রী সুরমা বেগম লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ৩১ জুলাই দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন সুরমা বেগম। বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি করে থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই।

গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির ঢাকা জেলার এসপি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, কেবিনের খাটের নিচে লাশ- এমন খবর নৌ পুলিশ আমাদের জানায়। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা আলামত সংগ্রহ করি। লাশ উদ্ধারের পর এসআই সালেহ ইমরানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ওই টিম আরজুকে গ্রেফতার করে। এসপি খোরশেদ আরও বলেন, আরজু ও বাচ্চু দুজনের গ্রামের বাড়িই ভোলায়। ২৯ জুলাই সকালে বাচ্চু গ্রামে যাবেন মর্মে খবর পান আরজু। এরপর বাচ্চুকে লঞ্চের একটি কেবিন ভাড়া করে তাকেও বাড়ি নিয়ে যেতে অনুরোধ করেন।

এ খবরে স্টাফ কেবিন ভাড়া করেন বাচ্চু। ভাড়া নেওয়ার সময় তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে লঞ্চে ওঠেন। লঞ্চে তারা শারীরিক মেলামেশা করেন। লঞ্চ ছাড়ার ঘণ্টাখানেক পর আরজু ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত দুধ খাইয়ে দেন বাচ্চুকে। অচেতন হয়ে গেলে ওড়না দিয়ে বাচ্চুর হাত এবং পা বেঁধে ফেলেন। পরে অন্য একটি ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। তারপর বাচ্চুর লাশ কেবিনের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। লঞ্চটি ভোলার ইলিশা ঘাটে পৌঁছালে আরজু নেমে যান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর