শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

এখনো জ্ঞান ফেরেনি সামিরার

প্রবাসী পরিবারে ট্র্যাজেডি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটের ওসমানীনগরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়া প্রবাসী রফিকুল ইসলামের মেয়ে সামিরা ইসলামের জ্ঞান এখনো ফেরেনি। ঘটনার ১০ দিনেও তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। নিথর অবস্থায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছে সে। তার কিডনি ও লিভারসহ কয়েকটি অঙ্গ কাজ করছে না বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। বুধবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ওসমানীনগরের তাজপুরে স্কুল রোডের বাসায় ফিরে যান সামিরার মা হোসনে আরা বেগম ও ভাই সাদিকুল ইসলাম। হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আবদুল গাফ্ফার একথা জানান।

 তবে তাদের আরও কয়েকদিন ওষুধ সেবন করতে হবে। তিনি জানান, ২৬ জুলাই অচেতন অবস্থায় যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম, ছেলে সাদিকুল ইসলাম ও মেয়ে সামিরা ইসলামকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় মা ও ছেলেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সামিরার জ্ঞান ফেরেনি। এদিকে, বুধবার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। এ সময় হোসনে আরা পুলিশ সুপারকে জানান, বিদ্যুৎ না থাকলে বাসার ভিতর জেনারেটর চলত। জেনারেটর চালুর পর তার ছেলে মাইকুল ইসলামের শ্বাসকষ্ট হতো। বাসায় জেনারেটর চালু করে পুলিশও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। জেনারেটর চালুর পর পুলিশ সদস্যরা অস্বস্তিকর পরিস্থিতি উপলব্ধি করেছেন বলে জানান পুলিশ সুপার। পুলিশের ধারণা ঘটনার রাতে দীর্ঘসময় জেনারেটর চালু থাকায় শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে না পেরে দমবন্ধ হয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও তার ছেলে মাইকুল ইসলাম মারা যান। অচেতন হয়ে পড়েন স্ত্রী ও অপর এক ছেলে ও মেয়ে। জেনারেটরের ধোঁয়ায় কী ধরনের বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে তা নিশ্চিতে ফায়ার সার্ভিসের কাছে আলামত পাঠানা হয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতে পুলিশ মারা যাওয়া পিতা-পুত্রের ময়নাতদন্ত ও ওই রাতে খাবারের রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্টের দিকে তাকিয়ে আছে। পুলিশ সুপার জানান, ধারণা করা হচ্ছে ঘটনার রাতে দীর্ঘক্ষণ জেনারেটর চালু থাকায় ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে না পেরে দমবন্ধ হয়ে এ ট্র্যাজেডি ঘটতে পারে। তবে এখনো নিশ্চিত হয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, ১২ জুলাই রফিকুল ইসলাম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেন। ঢাকায় একসপ্তাহ থেকে ১৮ জুলাই তাজপুর স্কুল রোড এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। ২৫ জুলাই সোমবার রাতের খাবার খেয়ে স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েদের নিয়ে একটি কক্ষে রফিকুল এবং অপর দুটি কক্ষে শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রী ও শ্যালকের মেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে অন্যান্য কক্ষে থাকা আত্মীয়রা ডাকাডাকি করে রফিকুলদের কোনো সাড়া না পেয়ে ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন দেন। দুপুর ১২টার দিকে ওসমানীনগর থানা পুলিশের একটি দল এসে অচেতন অবস্থায় পাঁচ প্রবাসীকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসকরা রফিকুল ইসলাম ও মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে আইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর