শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল

অপরিষ্কার-অব্যবস্থাপনায় ভোগান্তিতে রোগীরা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

অপরিষ্কার-অব্যবস্থাপনায় ভোগান্তিতে রোগীরা

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ জন রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করে। অথচ এখানে আছে মাত্র একটি বাথরুম। তার অবস্থাও বর্ণনা করার মতো নয়। আবর্জনা ও ময়লা পানিতে ভরে থাকে বাথরুমের মেঝে। থাকে পানির স্বল্পতা। মাত্র একটি বাথরুম হওয়ায় নারী-পুরুষ সবাইকেই লাইন ধরে অপেক্ষা করতে হয়। এ চরম অব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি ও বিপাকে পড়তে হয় মহিলা, বৃদ্ধ ও শিশুদের। শুধু বাথরুম নয়, চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটির পরতে পরতে অব্যবস্থাপনা ও অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতার বিষয়টি স্পষ্টত প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের  বেহায়াপনা। এক শ্রেণির অসাধু কর্মচারীর দায়িত্বে অবহেলার কারণে এসব সমস্যা প্রকট হচ্ছে বলে অভিযোগ। হাসপাতালের রোগী ইরশাদুল আলম অভিযোগ করে বলেন, আগে নিচতলায় মহিলা ও দ্বিতীয় তলায় পুরুষদের আউটডোর টিকিট দেওয়া হতো। এখন সবার টিকিট দেওয়া হচ্ছে নিচতলায়। যেখানে পুরুষ-মহিলাদের গাদাগাদি করে দাঁড়াতে হয়। থাকে না কোনো দূরত্ব। বহির্বিভাগে অসুস্থ রোগীর বসার জায়গা সংকট চরমে। নষ্ট একটি বাথরুমে নারী-পুরুষ সবাইকে যেতে লাইন ধরতে হয়। সিঁড়িতে সব সময় থাকে ভিক্ষুক। ভিতরেই থাকে বাদাম বিক্রেতা। বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে ময়লা। যেদিকেই চোখ যায় অপরিষ্কার-অব্যবস্থাপনার বিষয়টি দেখা যাবে। গত শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের সিঁড়ির কর্নারের দেয়ালে আছে পানের দাগ। দাগে তৈরি হয়েছে এক বিশ্রি চিত্র। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে লিফট স্থাপনের কাজ। লিফটের সামনে এলোমেলোভাবে ফেলে রাখা হয়েছে নানা পণ্য। হাসপাতালের দুই ভবনে যোগাযোগের পথে ফেলে রাখা হয়েছে বিভিন্ন জিনিস। আইসিইউ বিভাগের সামনে ময়লা ও রক্তযুক্ত কিছু সাদা কাপড় স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এখানকার ভবনের এক কর্নারে এক্স-রে রুমের পাশেই রাখা হয়েছে জীবাণুযুক্ত ময়লা-আবর্জনা। হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় একটি সচেতনতা ও সতর্কতামূলক প্রচারণার ভিডিও প্রদর্শনীর প্রজেক্টরের ডিজিটাল স্ক্রিন আছে। সেখানে স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতামূলক ভিডিও প্রচারিত হয়। অথচ এটির সামনে আড়াআড়ি করে রাখা হয়েছে নষ্ট টুল, টুলের ওপর রাখা হয়েছে চেয়ার। ফলে ডিজিটাল স্ক্রিনটি এখন নষ্টের পথে। এভাবে অবহেলা, অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে চলেছে করোনাকালে চট্টগ্রামের ডেডিকেটেড এই হাসপাতালটি।             

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ওয়ার্ডবয় ও পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংকট আছে। তবে বর্তমানে কর্মরতদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া আছে, যাতে হাসপাতাল সব সময় পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। পরিষ্কারের বিষয়টা আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। তাছাড়া বর্তমানে লিফট স্থাপনসহ কিছু অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। তাই বিভিন্ন জায়গায় নির্মাণ উপকরণ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করি রোগীদের সুন্দর পরিবেশে উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে। কিন্তু জনবল, চিকিৎসা উপকরণসহ নানা সংকট সব সময় লেগেই থাকে। আন্তরিকতা ও ইচ্ছা থাকলেও অনেক সময় সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক কিছু করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে বিদ্যমান সম্বল দিয়ে সেবা দেওয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর