মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

সিলেট বিমানবন্দরে ফের যাত্রী হয়রানির অভিযোগ

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আবারও লন্ডনগামী যাত্রীকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পূর্ব লন্ডনের বাসিন্দা মিজান এ অভিযোগ করেছেন। তিনি এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, ৮২ বছরের মা খোদেজা বেগমকে নিয়ে তিনি সিলেট থেকে লন্ডন আসার সময় হুইল চেয়ার নিয়ে বিড়ম্বনায় ভুগেছেন। তিনি জানান, গত ২৭ জুন বাংলাদেশে গিয়ে ২৯ জুলাই তিনি তার বৃদ্ধা মা খোদেজা বেগমকে নিয়ে ফিরে আসেন লন্ডনে। ফেরার দিন তিনি এক বিচিত্র অভিজ্ঞতার শিকার হন। লন্ডনে টিকিট বুকিংয়ের সময়ই তিনি মায়ের জন্য হুইল চেয়ার সহায়তা লাগবে বলে জানিয়ে রাখেন, যা বোর্ডিং পাসে উল্লেখ ছিল। কিন্তু বোর্ডিং কাউন্টারে যেতেই বিমানের কর্মকর্তা বলেন, হুইল চেয়ারের জন্য ডাক্তারের সার্টিফিকেট লাগবে। তারপরই মিজান পাশেই একজন ডাক্তারকে দেখান। তখন ওই কর্মকর্তা বলেন, মেডিকেল সার্টিফিকেট লাগবে। বাধ্য হয়ে মিজান বৃদ্ধা মাকে নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে যান। চেম্বারে বসা ডা. মুশফিকুর রহমান বলেন, সার্টিফিকেট নিতে ১ হাজার টাকা লাগবে। ‘১ হাজার টাকার বিনিময়ে রসিদ দেওয়া হবে কি না’ জানতে চাইলে ডাক্তার মুশফিক বলেন, ‘সার্টিফিকেট পাবেন। রসিদ দেওয়া যাবে না।’ তখন মিজান রসিদ ছাড়া টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ডা. মুশফিক তাদের সার্টিফিকেট না দিয়ে বের করে দেন। মিজান আবারও ফিরে যান টিকিট বোর্ডিং কাউন্টারে। সেই কর্মকর্তা বলেন, সার্টিফিকেট ছাড়া ফ্লাইটে উঠতে দেওয়া হবে না। তখন নিরুপায় হয়ে যাত্রী মিজান আবার যান ডা. মুশফিকের চেম্বারে। মা তখন প্রায় ১২/১৩ ফুট দূরে বসা ছিলেন। টাকা দিতেই মিনিটের মধ্যে সার্টিফিকেট তৈরি হয়ে গেল। মিজান বলেন, ‘মা আসলেই ফ্লাইটের উপযুক্ত কি না, এর জন্য কোনো ধরনের পরীক্ষা- নিরীক্ষা তো দূরের কথা- এমনকি মায়ের দিকে তাকানওনি ডাক্তার।’ মিজান জানান, সেই ফ্লাইটে তার মাসহ আরও ৬/৭ জন যাত্রী ছিলেন হুইলচেয়ারে। প্রত্যেকেই ১ হাজার করে টাকা দিয়েছেন ডা. মুশফিকের হাতে। বিনিময়ে রসিদ পাননি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিমান সিলেটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ডা. মুশফিক নিজেই এই নিয়ম চালু করেছেন। আসলে বিমান বা সিভিল এভিয়েশনের হুইলচেয়ার বাবদ কোনো চার্জ নেই।

১ হাজার টাকা দিয়ে হুইল চেয়ারের জন্য সার্টিফিকেট নেওয়ার পরও মিজানের হয়রানি শেষ হয়নি। মিজান জানান, তার দুই লাগেজের মোট ওজন ছিল ৮০.৫ কেজি। বিমানবন্দর আসার পর যাত্রী লাউঞ্জের ভিতরে রাখা সিভিল এভিয়েশনের বড় স্কেলে মেপেও ৮০.৫ কেজি পান। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে মাত্র ২০/২৫ ফুট দূরের বোর্ডিং কাউন্টারে একই লাগেজের ওজন তারা দেখাচ্ছিলেন প্রায় ৮৪ কেজি, মানে প্রায় সাড়ে ৩ কেজি বেশি। এ জন্য বিমান কর্মকর্তা ১ হাজার ৮০০ টাকা প্রতি কেজি হিসাবে প্রায় ৬ হাজার টাকা দাবি করেন। শেষ পর্যন্ত মিজান ৩ কেজি ওজন কমিয়ে আনতে বাধ্য হন। উল্লেখ্য, এর আগেও সিলেট বিমানবন্দরে লন্ডনগামীরা নানা ধরনের অনিয়মের মুখোমুখি হচ্ছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর