শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

রাজধানীতে চুরি বেড়েছে ৪৮ ঘণ্টায় আটক ২২

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে সব ধরনের চুরি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। মোটরসাইকেল, রিকশা, সরকারি-বেসরকারি গাড়ির তেল চুরিসহ নানাবিধ চুরি বেড়েই চলেছে। এ চোর চক্রের সদস্যরা প্রায়ই ধরা পড়ছে, জেলহাজতেও যাচ্ছে। কিন্তু আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে ফের চুরিতে জড়িয়ে পড়ছে। পুলিশ গত ৪৮ ঘণ্টায় এ চোর চক্রের মোট ২২ সদসকে গ্রেফতার করেছে। এরা মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, সরকারি গাড়ির তেল চুরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে সীমান্ত থেকে চোরাই মোটরসাইকেল সংগ্রহ করে রাজধানীতে বিক্রি ও মোটরসাইকেল চোর চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সংঘবদ্ধ অটোরিকশা চুরি করে কেনাবেচা চক্রের সাত সদস্য গ্রেফতার করেছে ডিএমপির ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। আগারগাঁও থেকে উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল গাড়ির জ্বালানি বা তেল চুরি চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, এসব চোর চক্রের চুরির ধরন একেক রকম। প্রতিনিয়ত চোর চক্রে নতুন সদস্য যোগ হচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে চুরি বেড়ে যাওয়ায় নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধার এবং আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা হতাশা প্রকাশ করেন। অনেক ভুক্তভোগী চুরি হওয়ার পর থানায় অভিযোগ বা পুলিশকে অবহিত করতে চান না। ফলে এসব চোর চক্রের সদস্য ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।

গতকাল ডিএমপির লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. জাফর হোসেন নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চুরি চক্রে জড়িত সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। এ ছাড়া গতকাল নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উত্তরা বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত দক্ষিণখানের বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযানে চোরাই মোটরসাইকেল কেনাবেচার চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চক্রটি সীমান্ত এলাকা থেকে চোরাই মোটরসাইকেল সংগ্রহ করে বিভিন্ন কুরিয়ারের মাধ্যমে দক্ষিণখান এলাকায় নিয়ে আসত। পরে সেগুলো অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে বৈধ কাগজপত্র বানিয়ে দেওয়ার আশ্বাসে বিক্রি করত ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের এডিসি আশরাফউল্লাহ বলেন, মঙ্গলবার ঢাকার উত্তরা ও আশুলিয়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অটোরিকশা চুরি ও কেনাবেচা চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরা গ্রামের সহজ-সরল অটোরিকশা চালকদের টার্গেট করে অটোরিকশায় ওঠে। কিছু দূর যাওয়ার পর রিকশাচালককে কোনো একটি বাড়ি বা বাড়ির দারোয়ানের কাছ থেকে ফাইল বা অন্য কিছু নিয়ে আসার অনুরোধ করে তারা। তাদের অনুরোধে রিকশাচালক রেখে আসা ফাইল বা অন্য কিছু আনতে গেলে এদিক-সেদিক তাকিয়ে অটোরিকশাটি নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা। চুরি করা এসব অটোরিকশা তারা নির্ধারিত গ্যারেজে নিয়ে রংসহ অন্যান্য অংশের পরিবর্তন করে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করত।

গতকাল নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের ডিসি এইচ এম আজিমুল হক বলেন, দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের সামনের কয়েকটি দোকানে সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল গাড়ির তেল চুরি করে বিক্রির সময় চোর চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। আগারগাঁও এলাকায় সরকারি অফিসের আধিক্যের কারণে সরকারি গাড়িও বেশি। একটি চোর চক্র এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে এ এলাকার সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ৫০টি গাড়ি থেকে ৩ থেকে ৪ লিটার করে তেল চুরি করত। একটি দোকান দিনে প্রায় ২০০ লিটার চোরাই তেল কিনত। যার মাসিক হিসাব প্রায় ৬ হাজার লিটার। এভাবে মোট তিনটি দোকানে মাসে প্রায় ১৮ হাজার লিটার জ্বালানি তেল বেচাকেনা হতো।

সর্বশেষ খবর