সোমবার, ১৫ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ভরা মৌসুমে ইলিশের আকাল

নেপথ্যে বৈরী আবহাওয়া, বরিশালে দাম চড়া

রাহাত খান, বরিশাল

ভরা মৌসুমে ইলিশের আকাল

ভরা মৌসুমেও কাক্সিক্ষত ইলিশ মিলছে না নদী কিংবা সাগরে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নদী-সাগর উত্তাল থাকায় জেলেরা জাল ফেলে মাছ ধরতে পারছেন না। এ জন্য বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গত তিন দশকে ভরা মৌসুমে ইলিশের এত আকাল দেখেননি আড়তদাররা। সরবরাহ কম থাকায় ইলিশের দাম চড়া। গতকাল দেড় কেজি আকারের প্রতি মণ ইলিশ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৭৫ হাজার টাকায়। তবে বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলে নদ-নদীতে প্রচুর ইলিশ আহরিত হবে এবং তখন দামও নাগালের মধ্যে আসার প্রত্যাশা মৎস্য বিভাগের।

নদ-নদীতে সারা বছর কম-বেশি ইলিশ পাওয়া যায়। তবে শ্রাবণ-ভাদ্র-আশ্বিন এই তিন মাসকে ইলিশের ভরা মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। প্রতি বছর এই সময়ে নদী ও সাগরের হাজার হাজার মণ ইলিশে সয়লাব থাকে বরিশালের পোর্ট রোডের ইলিশ মোকাম। কিন্তু কয়েক দিন ধরে ইলিশের খরা চলছে নদী ও সাগরে। গতকাল বরিশাল পাইকারি বাজারে দেড় কেজি আকারের প্রতি মণ ইলিশ ৭৫ হাজার, ১ কেজি ২০০ গ্রাম আকারের ইলিশ ৬২ হাজার, ১ কেজি আকারের ইলিশ ৫৮ হাজার এবং রপ্তানিযোগ্য এলসি সাইজ (৬০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম) প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ৪৯ হাজার টাকায়। ইলিশের আড়তদার আবুল কালাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

 

জেলা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য নাসির উদ্দিন জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে নদী ও সাগর উত্তাল। জেলেরা উত্তাল নদী-সাগরে জাল ফেলতে পারে না। ইলিশের আহরণ কম থাকায় বাজারে সরবরাহও কম। গত তিন দশকেও ভরা মৌসুমে ইলিশের এমন আকাল কিংবা চড়া দাম দেখেননি তিনি।

ইলিশ আড়তদার শেখ রিপন বলেন, অন্য বছর এই সময়ে মোকামে স্থানীয় নদীর ২ থেকে আড়াই হাজার মণ ইলিশ পাওয়া যেত। গতকাল সর্বসাকুল্যে ৫০ মণ ইলিশ এসেছে আড়তে। এর আগের দিন এসেছিল প্রায় ১৫০ মণ ইলিশ।

খুচরা মাছ বিক্রেতা আবদুল হালিম জানান, ইলিশের দাম চড়া হওয়ায় প্রভাব পড়েছে অন্যান্য মাছে। গত কয়েক দিনে সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে। আগে যারা ৫ কেজি মাছ কিনতেন এখন তারা আধা কেজি কেনেন। অনেকে মাছ না কিনে খালি হাতে ফিরছেন। এতে ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে।

বরিশাল জেলা মৎস্য বিভাগের ইলিশ বিশেষজ্ঞ ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, নদী-সাগরে প্রচুর ইলিশ আছে। কিন্তু সাগর ও নদী উত্তাল থাকায় জেলেরা মাছ ধরতে পারছে না। বৈরী আবহাওয়া কেটে গেলে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে এবং তখন দামও সাধারণের নাগালের মধ্যে আসবে।

মৎস্য বিভাগের হিসাব মতে, গত বছর বরিশাল জেলায় ৪১ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরিত হয়েছিল। এ বছর ৪৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের আশা মৎস্য বিভাগের।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর