মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

আটকে আছে ৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

রাজশাহী ওয়াসা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে আটকে আছে ভূপৃষ্ঠের উৎস থেকে পানি সরবরাহ বৃদ্ধি প্রকল্প। চীন থেকে ঋণের টাকা না পাওয়ায় এবং পাইপলাইন বসানোর জায়গা নিয়ে জটিলতায় ৪ হাজার ৬২ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় সুপেয় পানির অপেক্ষা বাড়ছে নগরবাসীর।

রাজশাহীর পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) সরবরাহ করা পানি পানযোগ্য নয়। ওয়াসার উদ্যোগেই পরিচালিত এক পরীক্ষায় পানিতে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। ওয়াসাসূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে পদ্মার পানি পরিশোধন করে সরবরাহ বৃদ্ধি করতে ৪ হাজার ৬২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০১৮ সালের অক্টোবরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। গত ২১ মার্চ ঢাকায় রাজশাহী ওয়াসার সঙ্গে চীনের হুনান কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

প্রকল্পের মোট অর্থের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ১ হাজার ৭৪৮ কোটি ও এক্সিম ব্যাংক অব চায়না ২ হাজার ৩১৩ কোটি টাকা দেবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ধরা হয় চার বছর। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রতিদিন রাজশাহী মহানগরীতে ২০০ মিলিয়ন লিটার পানি সরবরাহ সম্ভব হবে।

কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকার কারণ হিসেবে রাজশাহী ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বলছে, সওজের সঙ্গে জমি জটিলতা এবং চীন থেকে ঋণের অর্থ না আসায় এখনো কাজ শুরু হয়নি। কবে নাগাদ জটিলতা কাটতে পারে তা-ও বলতে পারছেন না ওয়াসার কর্মকর্তারা।

বিষয়টি নিয়ে জুনে বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে। সভায় ওয়াসার পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রকল্পের মূল শোধনাগার নির্মাণ হবে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে। এজন্য সরকারি অর্থায়নে ৫২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। গোদাগাড়ী থেকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের পাশ দিয়ে পাইপলাইন আসবে শহরে। এ জমি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের। সওজের কাছে জমি ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছে ওয়াসা। কিন্তু সওজ এ বিষয়ে এখনো কিছু জানায়নি।

জমি জটিলতার বিষয়ে সওজের রাজশাহী জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘ওয়াসা যখন সমীক্ষা করে তখন সওজের জায়গায় পাইপলাইনের বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি। মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা আছে। তাই আমরা এখনই জায়গা দিতে পারছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার বিষয়ে যারা সমীক্ষার কাজ করছেন, আমরা তাদের পরামর্শ চেয়েছি। তারা যা পরামর্শ দেবেন তা ওয়াসাকে জানানো হবে।’

রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকীর হোসেন বলেন, ‘প্রকল্প প্রস্তুতের পরই জায়গার বিষয়ে কথাবার্তা হয়। এটা আগে হয় না। একটা জটিলতা দেখা দিয়েছে তার সমাধানও হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘চীন থেকে ঋণের অর্থ না আসায় আমরা কাজ শুরু করতে পারছি না। বিষয়টি ঢাকায় সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর