শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

খুলনায় হঠাৎ উত্তপ্ত রাজপথ

একই স্থানে আওয়ামী লীগ-বিএনপির কর্মসূচি, ভিন্ন তারিখে কর্মসূচি পালনের আহ্বান পুলিশের

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনায় রাজপথ দখলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে বিএনপির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সমাবেশে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় সমাবেশস্থলে শতাধিক চেয়ার-টেবিল ও ৩০টির বেশি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আহত হয় বিএনপির সিনিয়র নেতাসহ ৩৫ জন নেতা-কর্মী। বিএনপি নেতারা সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, যুবলীগ ও ছাত্রলীগরা স্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থলে এসে হামলা করে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ নেতারা বলছেন, বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর নামে কটূক্তি করায় বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এদিকে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে একই স্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মসূচি ঘোষণা করায় সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে ভিন্ন তারিখে ভিন্ন স্থানে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছে। এর আগে ২৬ মে নগরীর পিকচার প্যালেস ও কেডি ঘোষ রোডে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ হয়। এতে হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারধরের ঘটনায় ২৫ জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগানের গুলি, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। ঘটনাস্থল থেকে নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। জানা যায়, ১৭ আগস্ট রাত সোয়া ৮টার দিকে বায়তুন নূর জামে মসজিদের পিছনের মাঠে বিএনপির সমাবেশস্থলে হামলা চালিয়ে চেয়ার-টেবিল, মাইক ও ৫০টির বেশি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ সময় পুরো এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল কেডি ঘোষ রোডে বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মহানগর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, ঘটনাস্থলে যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা হেলমেট পরে ও স্লোগান দিয়ে হামলা চালায়। তারা লোহার রড, লাঠি, বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে চেয়ার টেবিল, মাইক ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। হামলায় সিনিয়র নেতাসহ কমপক্ষে ৩৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়। নারী কর্মীরাও এ তা-ব থেকে রক্ষা পায়নি। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গেলে সেখানে হামলা করা হয়। তবে নগর যুবলীগের আহ্বায়ক সফিকুর রহমান পলাশ বলেন, বিএনপি সমাবেশস্থলে হামলার সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগ জড়িত নয়। তাদের দুই গ্রুপের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনাস্থলের পাশে ঝিনুক সিনেমা হলের সামনে বিএনপির একটি পক্ষ ‘৭৫-এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ স্লোগান দেয় ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করে। এ সময় যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ জানায়। বিএনপির কর্মীরা ওই স্থানে যুবলীগ-ছাত্রলীগের ওপর হামলা করে। কিন্তু এ ঘটনার সঙ্গে তাদের সমাবেশে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বা যুবলীগ-ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততা নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবহন খাতে ভাড়া বৃদ্ধি ও অব্যাহত লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে রাজপথে শক্ত অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছে বিএনপি। একই সঙ্গে সভা-সমাবেশের মাধ্যমে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা করছে।

 বিপরীতে আওয়ামী লীগও রাজপথে শক্ত অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করছে। ১৬ আগস্ট সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভায় নগর সভাপতি ও কেসিসি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, দলের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে রাজপথে সক্রিয় থাকতে হবে। দলের প্রয়োজনে নেতা-কর্মীদের রাজপথে নামতে হবে। এটা এখন চ্যালেঞ্জ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর