মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মেহেরপুর নওগাঁয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

মেহেরপুরে ‘মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়’ এবং নওগাঁয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপনে দুটি আইনের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন। এ ছাড়া বৈঠকে সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ও হালকা প্রকৌশল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালার অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভা মেহেরপুরে মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও নওগাঁয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় নামে আইন দুটি ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শুধু ‘বঙ্গবন্ধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়’ নাম পরিবর্তন করে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়’ নামকরণ করা হয়েছে। বাকি সব একই আছে।

গঠিত হচ্ছে সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ : সিলেটের উন্নয়নে ‘সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০২২’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সিডিএ বা কেডিএ অনুসরণে সিলেটের উন্নয়নের জন্য সিডিএ করা হয়েছে, যাতে সিলেটের সিটি করপোরেশন এলাকা বা পারিপার্শ্বিক এলাকার উন্নয়ন করা যায়। বিশেষ করে এখন সিলেট শহর ও আশপাশে খুবই অপরিকল্পিতভাবে অনেক বিল্ডিং বা বিভিন্ন নির্মাণ হচ্ছে। ফলে শহরের সৌন্দর্য ও যাতায়াত বা কনজেশনটা আনপ্ল্যানড হয়ে যাচ্ছে।

সে জন্য সিলেট শহরকে পরিকল্পিত শহর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এ আইনটির খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে জিঞ্জিরার শিল্প : ‘হালকা প্রকৌশল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা, ২০২২’-এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ নীতিমালার অধীনে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে জিঞ্জিরা এলাকার শিল্পগুলো। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দেশে যে হালকা প্রকৌশল হবে (লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং), এটার একটা নীতিমালা নিয়ে আসা হয়েছে। এটার জন্য স্থানীয় শিল্পের প্রসার হবে এবং শিল্প খাতের ভূমিকা আরও বাড়বে। আমাদের অর্থনীতির উন্নয়ন আরও বাড়বে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা যে উন্নত দেশ হতে যাচ্ছি, সে ক্ষেত্রে এটা বড় ভূমিকা রাখবে। এটা একটা মৌলিক খাত হিসেবে আমাদের দেশে বিবেচিত হবে। যেমন জিঞ্জিরা এলাকায় যে শিল্পগুলো, এগুলোকে একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হবে। যারা অথেনটিক প্রডিউসার তারা অনেক রকমের ব্যাকআপ পাবেন। বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে বিশেষ সুবিধা আছে, যেটা ২ পারসেন্ট রেট অব ইন্টারেস্ট। এ খাতগুলোতে নীতিমালা অনুসরণ করে বিনিয়োগ করলে সুবিধাগুলো পাবে।’ খন্দকার আনোয়ার বলেন, ৫০০ কোটি টাকার একটা ফান্ড আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের, সে ব্যাংক থেকেও তারা ২ পারসেন্ট রেট অব ইন্টারেস্টে ঋণ নিতে পারবেন। নারী উদ্যোক্তাদের জন্যও একটা বিশেষ প্রভিশন আছে। ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো সিকিউরিটি ছাড়া ঋণ নিতে পারবেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এটা হচ্ছিল না। বাংলাদেশ ব্যাংক এটাকে প্রমোট করবে, যাতে নারী উদ্যোক্তারাও এ সেক্টরের অধীনে বেনিফিট পান। এসব শিল্প খাত যদি রপ্তানিমুখী হয় সে ক্ষেত্রে তারা আলাদা প্রণোদনা পাবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মন্ত্রিসভা একটা নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছে, যেভাবে আমরা গার্মেন্টস সেক্টরকে ব্যাকআপ করি এসব ক্ষেত্রেও যারা রপ্তানিমুখী হবে তাদের সে সুবিধা দেওয়ার জন্য। এখানে প্রায় ৪০ হাজার হালকা প্রকৌশল শিল্প রয়েছে এবং ৬ লাখ প্রযুক্তিগত দক্ষ কর্মী ও উদ্যোক্তা সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন। তাদের জন্য এটি প্রণোদনা টাইপের কাজ হবে। তারা কাজের জন্য উৎসাহী হবে।’

গ্রিসে বৈধতা পাবেন বাংলাদেশিরা : গ্রিসে যে ১৪-১৫ হাজার বাংলাদেশি অবৈধ বা আন-অথরাইজড ভিসায় রয়েছেন তারা বৈধতা পাবেন। সেই সঙ্গে বছরে নতুন করে চার-পাঁচ হাজার শ্রমিক গ্রিসে যেতে পারবেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও হেলেনিক রিপাবলিকের (গ্রিস) মধ্যে মাইগ্রেশন অ্যান্ড মোবিলিটি বিষয়ক সমঝোতা স্মারক ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এমন তথ্য জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ও হেলেনিক রিপাবলিকের মধ্যে মাইগ্রেশন অ্যান্ড মোবিলিটি বিষয়ক সমঝোতা স্মারক মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে। এটা একটা গুড নিউজ। এই সমঝোতা স্মারকের পরিপ্রেক্ষিতে বছরে চার-পাঁচ হাজার বাংলাদেশি কৃষিক্ষেত্রে কাজ করা শ্রমিক বা দক্ষ ব্যক্তিরা যেতে পারবেন। তারা পাঁচ বছরের জন্য একটা ওয়ার্ক পারমিট পাবেন। তারপর পারফরম্যান্স বা নিয়মানুযায়ী সেটা বৃদ্ধি করা হবে। যদি সেটা করা হয় তাহলে শ্রমিকরা আরও থাকতে পারবেন। যত দিন এই সমঝোতা থাকবে তত দিন বছরে চার-পাঁচ হাজার বাংলাদেশি গ্রিসে অফিশিয়ালি যেতে পারবেন। আর এর মধ্যেও যে ১৪-১৫ হাজার যারা আন-অথরাইজড ভিসায় রয়ে গেছেন, তারাও এর মাধ্যমে ওখানে বৈধতা পাবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর