শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

গ্রামীণ টেলিকমের এমডিসহ দুই আইনজীবীকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ৪৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা আত্মসাৎ এবং প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল ইসলাম ও দুই আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সংস্থাটির উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি দল তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একই দিনে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ডাকা হয়। কিন্তু তিনি হাজির হওয়ার আগেই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদকের সচিব মো. মাহবুব হোসেন দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, গত ২৮ জুলাই গ্রামীণ টেলিকম পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের উপ-মহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠিয়েছেন। ওই প্রতিবেদন কমিশন পর্যালোচনা করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে এই অনুসন্ধান উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না চানতে চাইলে তিনি বলেন, দুদকের কাছে কলকারখানা অধিদফতর যে অভিযোগ দিয়েছে তার ভিত্তিতেই আমাদের অনুসন্ধান কার্যক্রম চলছে। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা অনুসন্ধান কাজে যতদূর আগাবেন তখন বোঝা যাবে এর সঙ্গে আসলে কে কে জড়িত। অথবা অনুসন্ধানের স্বার্থে কাকে ডাকা প্রয়োজন।

গত ২২ আগস্ট গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারজনকে তলব করে চিঠি দেয় দুদক। তার আগে ১৬ আগস্ট অভিযোগ সংক্রান্ত ১১ ধরনের নথিপত্র দুদকে আসে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি অনুসন্ধানে নথিপত্র চাওয়া হয় গত ১ আগস্ট। এর আগে অভিযোগ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের টিম গঠন করে দুদক। টিমে দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। টিমের অপর সদস্যরা হলেন- সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও নূরে আলম সিদ্দিকী।

পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের কোনো অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি। পাশাপাশি গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে আনা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের অভিযোগকে ভুল বোঝাবুঝি বলে আখ্যায়িত করেন তিনি। দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দুপুর সোয়া ১টা থেকে পৌনে ৩টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাজমুল ইসলাম বলেন, এখানে কোনো অর্থ আত্মসাৎ হয়নি। শ্রমিক ইউনিয়নের হিসাবে (ব্যাংক অ্যাকাউন্টে) টাকাটা গিয়েছে। ৪৩৭ কোটি টাকা তারা দাবি করেছিল, সে টাকা তাদের দেওয়া হয়েছে। এসব ব্যাখ্যা দুদককে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের চাহিদামতো কাগজপত্র সরবরাহ করেছি। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা একটি ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী। তিনি বলেন, আমরা আমাদের বক্তব্য দুদকে উপস্থাপন করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা একেবারেই সত্য নয়। আমরা আমাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে সেগুলোর কাগজপত্র দেখিয়েছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর