রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

কর্মসূচি ছাড়াই শোকের মাস পার করল চট্টগ্রাম যুবলীগ

লবিং তদবিরে ব্যস্ত পদ প্রত্যাশীরা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

কমিটি ভেঙে দেওয়ার কারণে জাতীয় শোক দিবসের কোনো কর্মসূচি নেই চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের ব্যানারে। তিন সাংগঠনিক কমিটিতে স্থান পেতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ প্রায় তিন হাজারের মতো পদ-প্রত্যাশী থাকলেও ব্যক্তি উদ্যোগেও জাতীয় শোক দিবসের চোখে পড়ার মতো কোনো কর্মসূচি নেই তাদের। পদের জন্য লবিং তদবিরে নেতারা কৌশলে শীর্ষ নেতাদের কাছে ধর্ণা দিলেও শোকের মাসে মাঠে না থাকায় তৃণমূলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চলছে তৃণমূলে নানা গুঞ্জনও। এসব নেতা এবং বিতর্কিতদের চিহ্নিত করে নতুন নেতৃত্ব দেওয়া জরুরি বলে ত্যাগী নেতারা দাবি করেন।

দলীয় ও স্থানীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি ভেঙে দেওয়া হলেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে প্রায় তিন হাজারের মতো পদ-প্রত্যাশী নেতা বায়োডাটা জমা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটিতে। এর মধ্যে তিন সাংগঠনিক কমিটিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদেই জমা পড়েছে ১৯১ জনের বায়োডাটা। কমিটি না থাকায় সাংগঠনিকভাবে কর্মসূচি না থাকলেও ব্যক্তি উদ্যোগে একাধিক কর্মসূচি পালন করেছেন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা কিছু সংখ্যক নেতা। ব্যক্তি উদ্যোগে ছিল খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল, শোকযাত্রা, গরিব মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ, আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন। এদের মধ্যে নগরে রয়েছেন দেলোয়ার হোসেন খোকা, দেবাশীষ পাল দেবু, প্রয়াত নেতা এমএ মান্নানের ছেলে দিদারুল আলম, এম আর আজিম, দিদারুল আলম চৌধুরী, আরশেদুল আলম বাচ্চু, নুরুল আনোয়ার, হাবিবুর রহমান তারেক, ইয়াছিন আরাফাতসহ আরও কয়েকজন। উত্তর জেলা যুবলীগে ছিলেন রাজিবুল হাসান সুমন, মো. আবুল বশর, ইউপি চেয়ারম্যান লায়ন মো. মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ আবু তৈয়বসহ কয়েকজন। দক্ষিণ জেলা যুবলীগে ছিলেন নাছির উদ্দিন মিন্টু, মোহাম্মদ ফারুক, আবু শাহাদাত মো. সায়েমসহ আরও কয়েকজন। এই তিন সাংগঠনিক কমিটির প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ জনের মতো নেতা ব্যক্তি উদ্যোগে শোক দিবসের কর্মসূচি পালন করেছেন।

একাধিক নেতা-কর্মী জানান, নগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের মধ্যে মোট ১৯১ জন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদে ফরম জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে কিছুসংখ্যক নেতা শোকের মাসের কর্মসূচি ব্যক্তি উদ্যোগে পালন করেছেন। বাকি নেতারা কোথায়? শুধু পদের লোভে রাজনীতি করছেন? সাংগঠনিক কর্মসূচি না থাকলেও নিজেদের কিছু করার কি সুযোগ নেই। তবে এসব নেতা এবং বিতর্কিত নেতাদের চিহ্নিত করে নতুন নেতৃত্ব দেওয়া জরুরি বলে ত্যাগী নেতারা দাবি করেন। কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপ-দফতর সম্পাদক দেলোয়ার শাহাজাদা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সাংগঠনিক কমিটি যেহেতু নেই, সেখানে ব্যক্তি উদ্যোগে তো করতে পারেন। ইতোমধ্যে অনেকেই করেছেন, এমন তথ্য ও ডকুমেন্ট আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে এসেছে। তবে নিজ নিজ দায়িত্ববোধ থেকেই এমন কর্মসূচি পালন করবেন কেউ বলার কিছু নেই। তাছাড়া তিন সাংগঠনিক কমিটির মধ্যে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ প্রায় ৩ হাজারের ওপর বায়োডাটা জমা পড়েছে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম যুবলীগের তিন (উত্তর, দক্ষিণ ও নগর) ইউনিটে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ১৯১টি বায়োডাটা কেন্দ্রীয় কমিটিতে জমা দেওয়া হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় সভাপতি পদে ৯ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২২ জন, নগরীতে সভাপতি পদে ৩৫টি আর সাধারণ সম্পাদক পদে ৭৩ জন এবং দক্ষিণ জেলায় সভাপতি পদে ১৩ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৯ জনের সিভি জমা দেন। এরপর অন্য পদের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৩ হাজারের মতো।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর