শিরোনাম
শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নিয়ন্ত্রণহীন হাইড্রোলিক হর্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

নিয়ন্ত্রণহীন হাইড্রোলিক হর্ন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আদর্শমান মতে, আবাসিক এলাকায় রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত শব্দের সহনীয় মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল। দিনের বেলা ৫৫ ডেসিবেল। বাণিজ্যিক এলাকায় দিনের বেলা ৭০ এবং রাতের বেলায় ৬০ ডেসিবেল। তাছাড়া হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতের আশপাশের ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে রাতে শব্দের সহনীয় মাত্রা ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল। শব্দের এসব সহনীয় মাত্রা কোথাও মানা হয় না। নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি থাকে শব্দের মাত্রা। সর্বত্রই নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ব্যবহার হচ্ছে হাউড্রোলিক হর্ন। দিন-রাত যানবাহনে প্রতিযোগিতা করে বাজানো হয় উৎকট ও বিকট আওয়াজের হাউড্রোলিক হর্ন। স্বাস্থ্যগত ক্ষতির শিকার হচ্ছেন শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধরা। পক্ষান্তরে, পরিবেশ অধিদফতর ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন গত বছরের ১৯ আগস্ট নগরের চমেক হাসপাতাল ও ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এলাকাকে ‘নো হর্ন জোন’ ঘোষণা করে। কিন্তু কোথাও মানা হয় না এ নির্দেশনা। উল্টো উধাও হয়ে গেছে নির্দেশনার সাইনবোর্ড। হর্নের এমন শব্দ সন্ত্রাসের সময়ে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের (বিএইচআরএফ) উদ্যোগে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আজ সকালে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহারের প্রতিবাদ ও বন্ধের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে। বিএইচআরএফ চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন, শব্দের যে আদর্শমান আছে, তা কোনোভাবেই মানা হয় না। ফলে আমরা একপ্রকার শব্দ সন্ত্রাসের শিকার। তাই আমরা হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করেছি। আমাদের দাবি- টাইগারপাস, বাটালি হিল, জিলাপি পাহাড়, কোর্ট হিল, সিআরবি, ডিসি হিল, সার্সন রোড, জাম্বুরি ফিল্ড, ফয়েস লেক, বায়েজিদ লিংক রোড, ওমেন ভার্সিটি, সি বিচ, ঝাউতলা, নাসিরাবাদ সরকারি বালিকা বিদ্যালয় এলাকাকে হর্নমুক্ত নীরব এলাকা ঘোষণার। এর মাধ্যমে প্রজন্মকে শব্দ সন্ত্রাস থেকে বাঁচানোই আমাদের লক্ষ্য। পরিবেশ অধিদফতর মহানগরের সহকারী পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, হাউড্রোলিক হর্নের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে হর্ন জব্দ ও জরিমানাও করা হয়। এরপরও অনেকে তা ব্যবহার করে। এখানে জরিমানার চেয়ে নিজের মানসিকতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ হর্নের মাধ্যমে মানুষ বিকট আওয়াজের শিকার হচ্ছে।  পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত মার্চ মাসে সংগৃহীত নমুনা অনুযায়ী, পাহাড়তলী গার্লস হাইস্কুলের সামনে ৭৬.৫ ডেসিবেল, জিইসি এলাকার ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে ৭১.০ ডেসিবেল, চমেক হাসপাতালের সামনে ৭৭.৫ ডেসিবেল, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে ৭৮.৫০ ডেসিবেল, আন্দরকিল্লা জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের সামনে ৭৪.৫ ডেসিবেল, লালখান বাজার মমতা ক্লিনিকের সামনে ৭৭.৫ ডেসিবেল, এ কে খান আল-আমিন হসপিটালের সামনে ৭৫.০ ডেসিবেল, পাঁচলাইশ সার্জিস্কোপ হসপিটালের সামনে ৭৭.০ ডেসিবেল এবং পূর্ব নাসিরাবাদের সাদার্ন হসপিটালের সামনে ৬৮.৫ ডেসিবেল মাত্রায় শব্দের তীব্রতা পাওয়া যায়। অন্যদিকে আবাসিক এলাকায় শব্দের মাত্রা ৫০ ডেসিবেল হলেও নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় ৬৭.৫০ ডেসিবেল, মেহেদীবাগের আমিরবাগ আবাসিকে ৭৪.৫০ ডেসিবেল, বাকলিয়া কল্পলোক আবাসিকে ৭৯.৫০ ডেসিবেল মাত্রায় শব্দের তীব্রতা পাওয়া যায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর