শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নতুন নেতৃত্বের অপেক্ষায় সিলেটের যুবদল নেতারা

প্রার্থী হওয়ার শর্তে হতাশ সাবেক ছাত্রদল নেতারা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সম্মেলন ঘিরে সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলে এখন বিরাজ করছে সাজসাজ রব। দীর্ঘ ২২ বছর পর সম্মেলনের মাধ্যমে শীর্ষ নেতৃত্ব বাছাইয়ের সুযোগ পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীরা। তবে শর্তের বেড়াজালের কারণে সাবেক ছাত্রদল নেতারা অনেকেই যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে পারছেন না। এ নিয়ে বিরাজ করছে ক্ষোভ ও হতাশা। মহলবিশেষ যুবদলের রাজনীতিকে কুক্ষিগত করতে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ‘আজগুবি’ শর্তজুড়ে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করছেন ছাত্রদলের সাবেক অনেক নেতার। এদিকে, সম্মেলন আয়োজন নিয়ে দিকনির্দেশনা দিতে গতকাল ঢাকা থেকে যুবদলের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল সিলেট গেছেন। আজ তারা ঢাকায় ফিরে সম্মেলন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং যাচাই-বাছাই করে ভোটার তালিকা প্রকাশের কথা রয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, সিলেট যুবদলের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০০ সালে। এর ১৯ বছর পর ২০১৯ সালে কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয় জেলা ও মহানগর শাখার আহ্বায়ক কমিটি। ২২ বছর পর দলের তৃণমূলের নেতারা পুনরায় নিজেদের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছেন। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর জেলা ও পরদিন মহানগর যুবদলের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। তফশিল অনুযায়ী গত ৩১ আগস্ট ছিল মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের শেষ তারিখ। পরে সময় বাড়িয়ে ২ সেপ্টেম্বর করা হয়। ইতোমধ্যে জেলা ও মহানগরের শীর্ষ দুই পদে ১৫টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হলেও গতকাল পর্যন্ত কেউ জমা দেননি। আজ শনিবার বেলা ২টা পর্যন্ত জমাদানের সময় বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু।  সম্মেলনে ভোটদানের মাধ্যমে ৫৮৭ জন কাউন্সিলর জেলার ও ৩২৪ জন মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবেন। জেলা শাখার আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু ও মহানগরের আহ্বায়ক নজিবুর রহমান নজিব প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় দুই শাখার সভাপতি পদেও নির্বাচন জমে উঠেছে। জেলা যুবদলের সভাপতি হিসেবে যেসব প্রার্থীর নাম আলোচিত হচ্ছে তারা হলেন, জেলা যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমদ এবং জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাহেদ আহমদ চমন ও আক্তার আহমদ। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচিত প্রার্থীরা হলেন বর্তমান সদস্য সচিব মকসুদ আহমদ, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান নেছার ও লিটন আহমদ।  মহানগর যুবদলের সভাপতি হিসেবে আলোচিত প্রার্থীরা হলেন বর্তমান সদস্য সচিব শাহনেওয়াজ বখত তারেক, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তোফাজ্জল হোসেন বেলাল, আনোয়ার হোসেন মানিক ও আশরাফ উদ্দিন ফরহাদ। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচিত প্রার্থীরা হচ্ছেন আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এমদাদুল হক স্বপন, কয়েস আহমদ, উমেদুর রহমান উমেদ ও মির্জা সম্রাট। এদিকে, সম্মেলনে প্রার্র্থী হতে কেন্দ্র থেকে কিছু বাধ্যবাধকতা জুড়ে দেওয়া হয়েছে। শর্তের মধ্যে রয়েছে কেউ প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্ট শাখার কোনো ইউনিটের কাউন্সিলর অথবা যুবদলের রাজনীতিতে তিন বছর সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে। এ বাধ্যবাধকতার কারণে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক এবং ছাত্রদলের রাজনীতি ছাড়তে আগ্রহী অনেকেই প্রার্থী হতে পারছেন না।  এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাবেক ছাত্রনেতাদের যুবদলের রাজনীতিতে উৎসাহ দিচ্ছেন। কিন্তু মহলবিশেষ প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতায় শর্তজুড়ে দিয়ে যোগ্য ও ত্যাগীদের দূরে রাখছেন। এতে সাবেক ছাত্রনেতারা হতাশ হয়েছেন।’ তবে শীর্ষ দুই পদে প্রার্থী হতে না পারলেও হতাশার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর