বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা দক্ষিণাঞ্চলে

ব্যবসায়ীদের মনে আশা জাগাচ্ছে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও রূপসা রেলসেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা দক্ষিণাঞ্চলে

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ তৈরি ও রূপসা রেলসেতু দিয়ে খুলনা-মোংলা রেললাইনে পণ্য পরিবহন সুবিধায় ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় রামপাল কেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেলে লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে আসবে। সেই সঙ্গে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেলের নির্ভরতাও কমবে। অন্যদিকে খুলনা-মোংলা রেললাইনে পণ্য পরিবহন সুবিধা কাজে লাগিয়ে মোংলা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে সারা দেশে রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যাবে। সে ক্ষেত্রে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি আরও গতিশীল হবে। জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে ৬ সেপ্টেম্বর রামপালে মৈত্রী তাপভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রথম ইউনিট ও রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর চলমান কার্যক্রম উপস্থাপন করা হয়। রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থারমাল পাওয়ার প্রজেক্টে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে ভারত ১৬০ কোটি মার্কিন ডলার রেয়াতি ঋণ দিচ্ছে। রামপালে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযোগ করা হবে। বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেডের প্রকল্প পরিচালক সুভাষচন্দ্র পান্ডে বলেছেন, মেগা পাওয়ার প্লান্টের দুটি ইউনিট চালু হয়ে গেলে রামপাল প্রজেক্টটি হবে বাংলাদেশের বৃহত্তম পাওয়ার প্লান্টগুলোর মধ্যে একটি। ৬ এপ্রিল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৪০০ কেভি জিআইএস সুইচইয়ার্ড ও আন্তসংযোগকারী ট্রান্সফরমারটি সক্রিয় করা হয়েছিল। তার পর থেকে এটি পায়রা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বাংলাদেশের ২৩০ কেভি গ্রিড সিস্টেমে ৪০০ কেভি বিদ্যুতের হুইলিং সুবিধা প্রদান করছে। যাতে বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন সর্বোচ্চ চাহিদা মেটাতে খুলনা অঞ্চলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে। ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আজহারুল ইসলাম জানান, রামপালে প্রথম ইউনিটে উৎপাদিত ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলে লোডশেডিং কমবে। খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মফিজুল ইসলাম টুটুল বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে এ অঞ্চলে রপ্তানিযোগ্য চিংড়ি শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংকটের তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের নির্ভরতা কমবে। এদিকে খুলনা-মোংলা রেললাইনে ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে রূপসা রেলসেতু সারা দেশের সঙ্গে মোংলা বন্দরকে রেলপথের মাধ্যমে সংযুক্ত করবে। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। মোংলা বন্দরে আরও গতি সঞ্চার হবে।

 কম খরচে মালামাল পরিবহন সহজ হবে। মোংলা বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হবে উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড় ও বাংলাবান্ধা হয়ে ভারতের শিলিগুড়ির রেল যোগাযোগ। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন মোংলা বন্দর পুরোপুরি সচল হবে। মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা জানান, প্রকল্পের রেললাইন বন্দর পর্যন্ত আসবে। বন্দরের কনটেইনার বেইজ রেলওয়ে সুবিধা থাকবে। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আগ্রহ তৈরি হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর