বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ফের রোটেশনে ফিরছে লঞ্চ

ঢাকা-বরিশাল থেকে প্রতিদিন ছাড়বে তিনটি করে লঞ্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

ফের রোটেশনে ফিরছে লঞ্চ

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বরিশাল-ঢাকা রুটে লঞ্চের যাত্রী অর্ধেকের বেশি কমেছে। এতে ধুঁকছিল লঞ্চ ব্যবসা। এর ওপর সব শেষ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে লঞ্চ ব্যবসায় লোকসান গুনছিলেন মালিকরা। এ অবস্থায় ঐতিহ্যবাহী লঞ্চ ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে আবারও রোটেশন প্রথায় ফিরে গেলেন তারা। এখন থেকে উভয়প্রান্ত থেকে তিনটি করে লঞ্চ চলবে প্রতিদিন। এ জন্য বরিশাল-ঢাকা রুটের সব লঞ্চ নিয়ে করা হয়েছে ছয়টি গ্রুপ। মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার (যাপ) প্রধান কার্যালয়ে সমিতির এক জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় ঢাকা-বরিশাল রুটের ১৮টি লঞ্চকে ছয়টি গ্রুপে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে ‘ক’ গ্রুপে এমভি সুন্দরবন-১১, এমভি পারাবত-১১ ও এমভি কীর্তনখোলা-২, ‘খ’ গ্রুপে এমভি সুরভী-৮, এমভি মানামী ও এমভি অ্যাডভেঞ্চার-৯, ‘গ’ গ্রুপে এমভি সুন্দরবন-১০, এমভি পারাবত-১২ ও এমভি অ্যাডভেঞ্চার-১, ‘ঘ’ গ্রুপে এমভি পারাবত-৯, এমভি সুরভী-৭ ও এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০, ‘ঙ’ গ্রুপে এমভি সুন্দরবন-১৬, এমভি কুয়াকাটা-২ ও এমভি পারাবত-১০ এবং ‘চ’ গ্রুপে এমভি সুরভী-৯, এমভি কীর্তনখোলা-১০ ও এমভি পারাবত-১৮ রয়েছে।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিদিন সন্ধ্যায় ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া তিনটি লঞ্চ ভোর ৫টার মধ্যে বরিশাল নদীবন্দরে এবং বরিশাল নদীবন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া তিনটি লঞ্চ সকাল ৬টার মধ্যে ঢাকার সদরঘাটে পৌঁছবে। লঞ্চগুলো পথিমধ্যে অসম প্রতিযোগিতা কিংবা কেউ কাউকে ওভারটেকও করতে পারবে না। যাপ সভাপতি মাহাবুব উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রমের সভাপতিত্বে সভায় সংস্থার সিনিয়র সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল ও ঢাকা নদীবন্দর নৌযান চলাচল ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক মামুন অর রশিদসহ বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চ মালিকরা উপস্থিত ছিলেন। সংস্থার সহ-সভাপতি মো. সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর লঞ্চযাত্রী কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে তেমন প্রভাব পড়েনি নৌপথে। কিন্তু সব শেষে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে লঞ্চগুলোতে প্রতি ট্রিপে    ১ থেকে ২ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছিল। এতে লঞ্চ মালিকরা বিপাকে পড়েন। তিনি বলেন, সভায়   কোনো কোনো মালিক সরকারের কাছে জ্বালানি তেলের জন্য ভর্তুকি চাওয়ার দাবি তোলেন। কেউ লঞ্চের সংখ্যা কমিয়ে আনতে বলেন। আবার কেউ লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে সরকারের কাছে প্রতিকার চাওয়ার পরামর্শ দেন। এ অবস্থায় সভায় উপস্থিত বেশির ভাগ লঞ্চ মালিক মতামত দেন দৈনন্দিন ট্রিপে লঞ্চের সংখ্যা কমিয়ে আনলে লঞ্চে যাত্রী বাড়বে। এতে লোকসান কিছুটা কমবে আশা তাদের। এতেও কাজ না হলে সরকারের কাছে জ্বালানি তেলের জন্য ভর্তুকিও চাওয়া হতে পারে বলে লঞ্চ মালিকরা আলোচনা করেছেন।

বরিশাল-ঢাকা রুটের এমভি মানামী লঞ্চের পরিচালক আহমেদ জাকি অনুপম বলেন, ধারাবাহিক লোকসান ঠেকাতে আপাতত উভয়প্রান্ত থেকে প্রতিদিন তিনটি করে লঞ্চ চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে সংস্থা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে বরিশাল এবং ঢাকা উভয়প্রান্ত থেকে ছয় থেকে সাতটি করে লঞ্চ চলাচল করছে। এতে সব লঞ্চের ডেক এবং কেবিনের বেশির ভাগ থাকছে ফাঁকা।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর