বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
রাজশাহী-চাঁপাই সড়ক

১৬ বাঁকে ৯ মাসে ৭০ দুর্ঘটনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

১৬ বাঁকে ৯ মাসে ৭০ দুর্ঘটনা

রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়ক। এর মধ্যে গোদাগাড়ী উপজেলার ৬ কিলোমিটার সড়কে ১৬টি বাঁক। এসব বাঁকে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ বছর গত ৯ মাসে এই সড়কে ৭০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে গোদাগাড়ী ফায়ার সার্ভিস। এতে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৮ সালে ৮৪ দিনে এই সড়কে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। দিন দিন দুর্ঘটনা বেড়ে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে সড়কটি। সড়ক বিভাগ বলছে, অতিরিক্ত বাঁক থাকায় দুই লেনের এই সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ। গোদাগাড়ী উপজেলা সদর থেকে রাজশাহী আসতে ১ কিলোমিটারে চারটি ও পরবর্তী ৫ কিলোমিটারে আছে ১২টি ভয়াবহ বাঁক। গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ জানিয়েছে, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পণ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম, গোদাগাড়ীর টমেটো ও করিডোরের গরু বহনকারী শত শত ট্রাক সারা দেশে যায় এ সড়ক দিয়ে। এ সড়কে পৌঁছাতে চালকরা ক্লান্ত হয়ে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। অনেক সময় রাজশাহীতে আসার পরে গাড়ির স্টিয়ারিং থাকে চালকের সহকারীর হাতে। ফলে ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের বাড়ি, দোকানপাট বা বিপরীতমুখী যানবাহনকে ধাক্কা দেয়। ট্রাকের চালক রবিউল ইসলামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। তিনি পাবনা থেকে সিমেন্ট নিয়ে আসছিলেন। দুর্ঘটনায় তার ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

বাঁ পা ও বাঁ হাত থেঁতলে গেছে। এ ছাড়া সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। রাজশাহী হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রবিউলের কাছে। কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি অটোরিকশায় চার-পাঁচজন যাত্রী ছিল। তাদের বাঁচাতে গিয়ে তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন। তখন বৃষ্টি ছিল, ব্রেকও কাজ করেনি।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী ফায়ার সার্ভিসের হিসাব মতে, চলতি বছর এ সড়কের গোদাগাড়ী অংশে ৭০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। সড়কটির কিছু অংশ রাজশাহীর পবা উপজেলার মধ্যে পড়েছে। ওই অংশে ঘটা দুর্ঘটনার হিসাব পাওয়া যায়নি। চলতি বছর ওই সড়কে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের গোদাগাড়ী স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার আকবর আলী বলেন, গোদাগাড়ী সড়কে এ বছর এখন পর্যন্ত ৭০টি দুর্ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যুর খবর আছে তাদের কাছে। অনেকে দুর্ঘটনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান, সেই খবর তাদের কাছে আসে না।  সড়কের বাঁক ও বেপরোয়া গতির কারণে বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে বলে উল্লেখ করেন আকবর আলী।

গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানে আলম বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলা এলাকায় ঢুকতে রাস্তায় এমন কয়েকটি বাঁক আছে, যেগুলোর কারণে ওপাশ থেকে কোনো গাড়ি এলে বোঝা যায় না। এ ছাড়া চালকরাও অনেক সময় গাড়ি সহকারীর হাতে ছেড়ে দেন।

সড়কটির বাঁকগুলো ঠিক করার জন্য তারা কাজ করছেন জানিয়ে রাজশাহী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হাকিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চার লেনের রাস্তা থেকে ওই এলাকায় দুই লেনের রাস্তা শুরু হওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটছে বেশি। সড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর