বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সন্ধ্যা হলেই ভুতুড়ে নগরী বরিশাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

সন্ধ্যা হলেই ভুতুড়ে নগরী বরিশাল

বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকার সড়ক বাতি (স্ট্রিট লাইট) এবং পানির পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া নিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং নগর ভবন কর্তৃপক্ষের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, গত জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৬০ কোটি টাকার বিল বকেয়া থাকায় প্রতীকী হিসেবে নগরীর স্ট্রিট লাইনের ১৪টি মিটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অপরদিকে সিটি করপোরেশনের দাবি কোনো পূর্ব নোটিস ছাড়াই গত সোমবার রাত এবং মঙ্গলবার রাতে নগরীর ৫৮টি স্ট্রিট লাইনের মিটার সংযোগ এবং ১১টি পানির পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, সিটি করপোরেশনের স্ট্রিট লাইনের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া এর আগের মেয়রদের আমলেই। ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগের মোট বকেয়া পাওনা ছিল ৪৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। ১৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ বিভাগকে ৭৮ লাখ টাকা বকেয়া বিল পরিশোধ করে নগর ভবন কর্তৃপক্ষ। এরপরও কোনো পূর্ব নোটিস ছাড়া গত সোমবার এবং মঙ্গলবার রাতে বিদ্যুৎ বিভাগ নগরীর সবগুলো স্ট্রিট লাইন এবং ১১টি পানির পাম্পের মিটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে নগরীর সব রাস্তাঘাট অন্ধকার হয়ে গেলে ভুতুড়ে অবস্থা তৈরি হয়। এ ঘটনায় নগর ভবন কর্তৃপক্ষ পরবর্তী করণীয় নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছে।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) বরিশাল বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিক্রয় বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমজাদ হোসেন জানান, সিটি করপোরেশন সাতটি অফিস, ৪৭টি পানির পাম্প এবং ৫৮টি স্ট্রিট লাইনে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। প্রতি মাসে বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১-এর আওতায় প্রায় ২৫ লাখ এবং বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২-এর আওতায় প্রতি মাসে ২০ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল হয়। গত জুলাই পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের কাছে বকেয়া ছিল ৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ১৬ হাজার ৯৪৩ টাকা। ১৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ বিভাগের সিটি কর বাবদ ৫৭ লাখ টাকা সমন্বয় (বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ) করে সিটি করপোরেশন। এরপরও মোটা অঙ্কের বকেয়া আছে নগর ভবন কর্তৃপক্ষের কাছে। বকেয়া আদায়ে বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১-এর আওতায় সাতটি এবং বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২-এর আওতায় সাতটি স্ট্রিট লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। কোনো পানির পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। মঙ্গলবার রাতে তারা জানতে পারেন নগরীর সব স্ট্রিট লাইট বন্ধ। অধীনস্তদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সিটি করপোরেশন নিজেরাই সব স্ট্রিট লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। আবার তারা নিজেরাই পানির পাম্প এবং সড়ক বাতির সংযোগ দিয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছেন।

গতকাল দুপুরে নগরীর আলেকান্দা আমতলা পানির পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ বলবৎ ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের একজন নেতা। এ বিষয়ে জানতে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর