শিরোনাম
বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

১৬ জেলায় ১১ ডুবুরি!

বড় নৌ-দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন

নজরুল মৃধা, রংপুর

উত্তরাঞ্চলে প্রায় সোয়া ৩ কোটি মানুষের জন্য ফায়ার সার্ভিসে রয়েছে মাত্র ১১ জন ডুবুরি। এই ১১ জন ডুবুরি সব সময় বিভাগীয় হেড কোয়ার্টার রংপুর ও রাজশাহীতে অবস্থান করেন। নদীতে বড় ধরনের দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা একেবারে কম। পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি ট্র্যাজিডিতে উদ্ধার অভিযানে ডুবুরির সংখ্যা কম থাকায় ফায়ার সার্ভিসের অসহায়ত্ত ফুটে উঠলে তারা তাদের সামান্য জনবল দিয়ে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। উত্তরের কোনো নদীতে দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধারে নেই কোনো নিজস্ব জলযান। কোথাও  উদ্ধার অভিযানে গেলে তাদের  স্থানীয়দের নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান চালাতে হয়। জানা গেছে, উত্তরের ১৬ জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে নদী রয়েছে প্রায় শতাধিক। এর মধ্যে তিস্তা, পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, করতোয়া, ধরলা, ঘাঘট ইত্যাদি নদী রয়েছে। এসব নদী বর্ষার সময় অনেক বেশি খরস্রোতা থাকে। শুকনো মৌসুমে এই অঞ্চলের নদ-নদীতে পানি কম থাকার কারণে অনেকে বড় ধরনের নৌ-দুর্ঘটনার কথা চিন্তা করেন না। এ কারণেই এই অঞ্চলে বছরের পর বছর ধরে উপেক্ষিত নৌ-দুর্ঘটনার উদ্ধারের জনবল ও নৌযান সংকটের বিষয়টি। উদ্ধার অভিযানে নিজস্ব কোনো নৌযান না থাকাকে অনেকে দুঃখজনক বলে মনে করছেন। রংপুর ও রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের বিভাগীয় অফিস সূত্রে জানা গেছে,  রংপুর বিভাগের আট জেলায় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন রয়েছে ৬০টি। অপরদিকে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন রয়েছে ৬৮টি। ১৬ জেলায় জলপথে দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযান চালানোর জন্য রয়েছে মাত্র ১১ জন ডুবুরি। এর মধ্যে রংপুর বিভাগে পাঁচজন এবং রাজশাহী বিভাগে ছয়জন। এসব ডুবুরি সব সময় বিভাগীয় অফিসে থাকেন। জলপথে উদ্ধার অভিযানের জন্য উত্তরের কোনো জেলায় ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব জলযান নেই। তবে রংপুর বিভাগে একটি জেমিনি বোট রয়েছে যা হালকা কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। নদীতে উদ্ধার অভিযান চালাতে গেলে স্থানীয়দের নৌকায় তাদের উদ্ধার অভিযান চালাতে হয়। ফায়ার সার্ভিসের সূত্রমতে পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ৬৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযানে রংপুর ও রাজশাহীর ডুবুরিরা এখনো পঞ্চগড়ে অবস্থান করছেন।  উত্তরাঞ্চলে ডুবুরি সংখ্যা কম ও জলযান না থাকা প্রসঙ্গে জেলা সুজনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের অন্যান্য স্থানের চেয়ে বরাবরই উত্তরাঞ্চল অবহেলিত। ১২৮টি ফায়ার স্টেশন এই অঞ্চলে। এখানে একটি উদ্ধারকারী জলযান নেই এটা খুবই দুঃখজনক। তিনি ডুবরি সংখ্যা আরও বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এদিকে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এই অঞ্চলে বর্ষা মৌসুম ছাড়া অন্য সময়ে নদ-নদীতে পানি কম থাকে। তাই দুর্ঘটনাও কম। তবে জলযান ও ডুবরি সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত বলে মনে করেন তারা। রংপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিন ও রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক অহিদুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড়ে নৌ দুর্ঘটনায় তাদের ডুবরি দল উদ্ধার অভিযানে কাজ করছেন। তারা বলেন, উদ্ধার অভিযানে তাদের নিজস্ব কোনো নৌযান নেই।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর