বুধবার, ৫ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

ছাত্রদলের কমিটিও আসছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে

যে-কোনো সময় ঘোষণা ১৪টিতে পাইপলাইনে আরও ৩০টির কর্মী সম্মেলন

আকতারুজ্জামান

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি, রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের কমিটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। শিগগিরই ১৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনটির কমিটি গঠন করা হবে। এ ছাড়া কমিটি গঠনের প্রস্তুতি হিসেবে কর্মী সম্মেলনের অপেক্ষায় রয়েছে আরও ৩০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। সব মিলিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় জোরেশোরেই সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। ছাত্রদলসূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। চলতি বছর দেশের প্রায় ৪০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ট্রাস্টি বোর্ড, উপাচার্য, সুশীলসমাজসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই এর প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিও দিয়েছিল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তথ্যমতে, ৩০ জুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের ‘সুপার ফাইভ’ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এর পরই এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘জুনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। এ কমিটি বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে। তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দেওয়ার বিষয়টি দেখভাল করছে। ইতোমধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মী সম্মেলন শেষ করা হয়েছে। কমিটির কাঠামোও চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই কমিটি দেওয়া হবে এগুলোয়। এ ছাড়া ধাপে ধাপে দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটির দেওয়ার কথা ভাবছি আমরা।’ জুয়েল বলেন, ‘শিক্ষায় ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ বেশ কিছু আন্দোলনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। সম্প্রতি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিরা ছাত্ররাজনীতির বিপক্ষে কথা বললেও আমরাই প্রথম ছাত্র সংগঠন, যারা সংবাদ সম্মেলন করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। রাজনীতি করা শিক্ষার্থীদের অধিকার। এতে বাধা দেওয়ার অধিকার কারও নেই।’ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল শাখা সূত্র জানান, কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কর্মী সম্মেলন শেষ করেছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। এ তালিকায় আরও রয়েছে- ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, আশা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এম রাজীবুল ইসলাম তালুকদার বিন্দু জানান, ২০০৯ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০১১ সালের ২৪ এপ্রিল ৫১ সদস্যের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটি দেশের নয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দিয়েছিল ২০১২ ও ২০১৩ সালে। নতুন কমিটি করার লক্ষ্যে আগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী সম্মেলন করা হয়েছে। এগুলোর কমিটি চূড়ান্ত অবস্থায় রয়েছে। আরও ৩০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী সম্মেলন অপেক্ষায় রয়েছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের কমিটি গঠনে শিক্ষা ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা পড়বে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দেশ পরিচালনা করেন রাজনীতিবিদরা। আর রাজনীতির নেতৃত্ব গড়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতৃত্ব গড়ে না উঠলে ভবিষ্যতে নেতৃত্বশূন্যতায় নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত হবে দেশ। তাই ছাত্ররাজনীতিকে নেতিবাচকভাবে দেখার সুযোগ নেই। বরং ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনকে দায়িত্ব পালন করতে না দিলে সেখানে মৌলবাদ, জঙ্গিবাদসহ অন্য সমস্যার উদ্ভব হওয়ার আশঙ্কা থাকে। রাজনীতি করা শিক্ষার্থীদের সাংবিধানিক অধিকার। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনেও কোথাও উল্লেখ নেই যে ছাত্রছাত্রীরা রাজনীতি করতে পারবেন না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর