বুধবার, ৫ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

চিকিৎসা শেষে কোথায় যাবেন অজ্ঞাত রোগীরা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নেন মধ্যবয়সী অজ্ঞাত এক মহিলা। অজ্ঞাত রোগী হিসেবে চিকিৎসা নিয়ে অনেকটা সুস্থও হন। এরপর ছাড়পত্র দেয় চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হাসপাতালের  চিকিৎসা সেবা শেষে কোথায় যাবেন। শেষ পর্যন্ত কী হবে অজ্ঞাত রোগী হিসেবে চিকিৎসা নেওয়া এ রোগীর। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিজের নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা না থাকায় সড়ক, ফুটপাথ, হাসপাতালের আশপাশের সড়ক, পরিত্যক্ত স্থানই হয় অজ্ঞাত রোগীদের শেষ ঠিকানা। এর মধ্যে অনেক অজ্ঞাত রোগীর হাত-পায়ে সার্জারি কিংবা ব্যান্ডেজ করা থাকে। সার্জারির ব্যান্ডেজ নিয়েই অজ্ঞাত রোগীগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছেন সড়কে, পথে পথে। শঙ্কা তৈরি হয় ইনফেকশনের। জানা যায়, চমেক হাসপাতালে অনেক অজ্ঞাত রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করে। অজ্ঞাত রোগীর সেবকখ্যাত নেছার ফাউন্ডেশন এসব রোগীর দেখাশোনা করে।  ২০০৭ সাল থেকে গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৯০০ অজ্ঞাত রোগীর সেবা করে সংস্থাটি। এর মধ্যে অধিকাংশ রোগীর কোনো গন্তব্য থাকে না। খুঁজে পাওয়া যায় না রোগীদের স্বজনদের। তারা অজ্ঞাত হিসেবেই পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়ায়। এর মধ্যে অধিকাংশ রোগী নিউরো সার্জারি, নিউরো মেডিসিন, সার্জারি, অর্থোপেডিক ও মেডিসিন বিভাগের। নিউরো সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাজেদ সুলতান বলেন, অজ্ঞাত রোগীরা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার পর তাদের যাওয়ার জায়গা থাকে না। বিষয়টি দুঃখজনক। তবে অনেক সময় অনেক রোগী হাসপাতালে বিভিন্নভাবে থেকে যায়। এ ব্যাপারে একটি পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।

না হয়, তারা চিকিৎসা নিয়ে যেটুকু সুস্থ হয়ে ওঠেন, প্রয়োজনীয় যত্ন বা সেবার অভাবে চিকিৎসা পরবর্তী সময়ে আবারও অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নেছার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নেছার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানাভাবে অসুস্থ ও আহত হয়ে অনেক অজ্ঞাত রোগী চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়ে তারা সুস্থও হন। কিন্তু পরে  তাদের আর কোনো গন্তব্য থাকে না। ফলে তাদের মধ্যে কেউ সড়কে, কেউ হাসপাতালের আশপাশের সড়ক ও ফুটপাথে অবহেলায় পড়ে থাকে। এর মধ্যে অনেকেই হাত-পায়ে সার্জারি হয়েছে এমন অজ্ঞাত রোগীও থাকে। এমন রোগীর প্রয়োজনীয় যত্নের অভাবে সার্জারিকৃত স্থানে ইনফেকশন দেখা দেয়। তাছাড়া এখানে অনেক মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীও থাকে। তিনি বলেন, সমস্যাটি কেবল চমেক হাসপাতালে নয়। দেশের বড় বড় হাসপাতালেও এমন রোগী আছে। এটি এখন জাতীয় সমস্যায় রূপ নিয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানগুলো একটি উদ্যোগ নিলে অজ্ঞাত রোগীদের একটি আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর