বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

অভিযোগের শেষ নেই রোগী ও স্বজনদের

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

অভিযোগের শেষ নেই রোগী ও স্বজনদের

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (শজিমেক) উত্তরের রোগীদের কাছে ভরসারস্থল হয়ে উঠেছে। উত্তরের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্র হওয়ায় দিন দিন রোগীর চাপ বাড়ছে এই হাসপাতালে। ৫০০ বেডের হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে দেড় হাজার রোগী ভর্তি থাকে। রোগী নিয়ে হিমশিম খেতে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। বেড না পেয়ে মেঝে, কড়িডর, এমনকি যে যেখানে জায়গা পেয়ে শুয়ে-বসে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। জানা গেছে, শজিমেক হাসপাতালে তিনগুণ রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতার অভাব রয়েছে। হাসপাতালের ওয়াশরুমের অবস্থা করুন। সঠিক পরিচ্ছন্নতার অভাবে হাসপাতালজুড়ে রয়েছে দুর্গন্ধ। দীর্ঘদিন রং না করায় মূল ভবনে ছত্রাক জন্মেছে। কোনো কোনো ওয়ার্ডে ড্যামভাব দেখা দিয়েছে। ভবন থেকে পুরনো রঙের আস্তরণ খুলে আসছে। রোগীদের অভিযোগ তাদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবারের মান নিম্নমানের। রোগীদের জন্য যা যা বরাদ্দ তা ঠিক করে মেলে না। হাসপাতালের বেড কাভারে বিভিন্ন দাগে ভরে থাকে। ধোপার ঠিকাদার থাকলেও ময়লা লেগেই থাকে কাপড়ে। অভিযোগ উঠেছে শুধু নামেই ধোয়া হচ্ছে হাসপাতালের বিভিন্ন জরুরি কাপড়গুলো। গত বছর শজিমেক হাসপাতালে ঠিকাদার নিয়োগে টেন্ডারের শিডিউল বিক্রি হয় ২৭টি। এরমধ্যে জমা হয় মাত্র তিনটি।

রহস্যজনক কারণে কোনো কোনো ঠিকাদার বছরের পর বছর একই মালামাল সরবরাহে ঠিকাদার নিয়োগ পেয়ে আসছেন। একই ঠিকাদার হওয়ার কারণে হাসপাতালের সরবরাহকৃত মালামাল নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। স্টেশনারি সরবরাহে তিনজন, খাবার সরবরাহে তিনজন, এমএসআর চারজন ও ধোপার কাজে একজন ঠিকাদার রয়েছেন। ঘুরেফিরে একই ঠিকাদার থেকে যাচ্ছে হাসপাতালে। যে কারণে অনিয়ম ও কারসাজিটি তারা ভালো করে রপ্ত করেছেন। আর এই অনিয়মের ঘটনাগুলো নিয়ে কেউ মুখ খোলে না। কোনো কোনো ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ায় চাকরি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হয় না।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসকসহ কিছু পদ ফাঁকা রয়েছে। প্রয়োজনীয় জনবল নেই। জনবল সংকট নিয়েই তিনগুণ রোগীর চিকিৎসা দিতে হয়। ১২০০ বেডের অনুমোদন পাওয়া গেলেও জনবল অনুমোদন পাওয়া যায়নি। তার ওপরে অতিরিক্ত রোগীর জন্য অতিরিক্ত কোনো ব্যবস্থা না থাকার পরও সেই সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই হাসপাতালে রোগীর এতটাই চাপ যে, সবদিকে তালমেলানো কষ্টসাধ্য। অপ্রতুল জনবল নিয়েই চিকিৎসাসেবা দিতে হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ১৯৯৮ সালে ২৫০ শয্যার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের প্রথম কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর মেডিকেল কলেজ ও হাসাপাতাল নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণের পর ২০০৬ সালে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি শহরের ছিলিমপুরে স্থানান্তর করা হয়। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় ব্যয় ব্যবস্থাপনা অধিশাখা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১২০০ শয্যায় উন্নীত করার আদেশ জারি করা হয়। ১২০০ শয্যার হাসপাতলের প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগের পর পূর্ণাঙ্গভাবে চিকিৎসাসেবা পাবে রোগীরা।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর