রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

অপরাধীদের তথ্য সংগ্রহে শতভাগ সফল হয়েছি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

অপরাধীদের তথ্য সংগ্রহে শতভাগ সফল হয়েছি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কাজ হলো সমাজে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগেই অপরাধীকে চিহ্নিত করা, অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা। আমরা এ ক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয়েছি।’ গতকাল রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। দিনটির কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদর দফতর থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়। র‌্যালিটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে এসে শেষ হয়। রাজারবাগের অডিটরিয়ামের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিদায় নেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের ফলে সমাজে বাল্যবিবাহ, ইভ টিজিং অনেক কমেছে। এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে আমাদের আরও কাজ করতে হবে। জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে আমরা যখন কঠিন সমস্যার মুখে পড়েছিলাম, তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সর্বস্তরের জনগণকে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তখন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যার যার জায়গা থেকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। সে সময় আমরা অভূতপূর্ব সফলতা দেখেছিলাম। জনগণ যখন পাশে থাকে কোনো কিছুই আর অসাধ্য থাকে না।’

তিনি বলেন, ‘কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সমাজকে আরও কীভাবে সুন্দর করা যায়, পরিচ্ছন্ন করা যায়, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। একসময় গ্রামে বিচারব্যবস্থা ছিল, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের লক্ষ্যও একই রকম। আমরা নিজেরা যদি নিজের সমস্যা সমাধান করতে পারি সমাজে অপরাধ অনেকটা কমে যাবে। আর পুলিশ তো সব সময়ই রয়েছে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলাম। মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন প্রথম ক্ষমতা গ্রহণ করেন তখন আপনারা দেখেছেন পাহাড়ি এলাকায় কী অবস্থা ছিল। সেখানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলত। প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে সে সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে আভিযানিক অপারেশনের পাশাপাশি তাদের আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগও দেওয়া হয়েছিল। এর পর থেকেই পাহাড়ি এলাকায় শান্তির সুবাতাস বইছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশে যেভাবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমন করা হয়েছে, তা বিশ্বব্যাপী আজ প্রশংসিত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের সমন্বয়ে আমরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সফলভাবে দমন করতে সক্ষম হয়েছি।’

তিনি বলেন, “দেশে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে ‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’ মূলমন্ত্রে আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। এখন প্রতি মাসে সারা দেশে প্রতি থানায় ‘ওপেন হাউস ডে’ পালন করা হয়। যেখানে সাধারণ মানুষ পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন, তাদের সমস্যা তুলে ধরেন।”

ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মূল কাজ সম্পর্ক স্থাপন, পার্টনারশিপ। পুলিশ সমাজের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সততার সঙ্গে, স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলে সমাজে অপরাধ কমবে, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। তরুণ প্রজন্মের কাছে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। কারণ তারাই ভবিষ্যতে দেশের নেতৃত্ব দেবে। অপরাধ দমনে সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশ ও জনতা মিলেই সমাজে অপরাধ দমন করতে হবে। তাহলে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে।

বিদায়ী ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চাকরিটাকে আমি ইবাদত মনে করেছি। চাকরিজীবনে কোনো অন্যায় সুবিধা গ্রহণ করিনি। আমি ডিএমপি কমিশনার হওয়ার পাঁচ-ছয় মাস যেতেই করোনা এসেছে। সে সময় বিধিনিষেধের কারণে স্বাভাবিক সভা-সমাবেশ বন্ধ হয়ে যায়। সে জন্য আমি খুব বেশি কমিউনিটি পুলিশিংয়ের জন্য কাজ করতে পারিনি। এর পরও আমি চেষ্টা করে গেছি এলাকার মানুষ নিয়ে কাজ করার।’

অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুল ইসলাম বলেন, সমাজে অপরাধ দমনে কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের কাজে লাগাতে হবে। পুলিশের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা কাজ করলে সমাজে অপরাধ কমে আসবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর