রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

দেশে ঋণ খেলাপি বড় সমস্যা

বললেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, আমাদের বড় সমস্যা হলো ঋণ খেলাপি। এই সমস্যা সারা বিশ্বেই রয়েছে। অন্য দেশগুলো এই সমস্যার মধ্যেও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ভারত ঋণ খেলাপিদের আইন অনুযায়ী সাজা দিচ্ছে। তবে কোম্পানিকে তারা বাঁচিয়ে রাখছে। আমরাও এটা নিয়ে কাজ করছি। আমাদের আইনটি পরিবর্তন করা হবে। ব্যাংক আইনে তাদের মতো করে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছি। গতকাল এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘দ্য রোল অব পিপিপি ইন অ্যাচিভিং ভিশন ২০৪১’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

সালমান এফ রহমান বলেন, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। পাবলিক পার্টনারশিপ প্রজেক্টগুলোতে আমরা জোর দিচ্ছি। বর্তমানে এ রকম ৭৬টি প্রজেক্ট হাতে রয়েছে। এর মধ্যে ১টির কাজ শেষ হয়েছে। জাপানের সঙ্গে তিন থেকে চারটির কাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া কোরিয়ার সঙ্গেও তিন থেকে চারটি প্রজেক্টের কাজ চলছে। কাজগুলো শেষ হলে আমরা এর সুফল পাব। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে আমাদের ফরেন এক্সচেঞ্জ ছিল না। এটি ছিল সবচেয়ে বড় সমস্যা। তখন আমরা শূন্য রিজার্ভ দিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। সে সময় জি টু জি পদ্ধতিতে আমরা পণ্য আমদানি করতাম। তখন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বেসরকারি খাতে এক্সপোর্ট করার বিষয়টি বলা হলো। বঙ্গবন্ধু বললেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। তবে ৬০ ভাগ ট্রেডিশনাল পণ্য এবং ৪০ শতাংশ নন-ট্রেডিশনাল পণ্য রপ্তানি করতে হবে। পাকিস্তান আমলে আমরা কোনোদিন চা রপ্তানি করিনি। তবে বঙ্গবন্ধুর পরামর্শে আমরা চা ও মধুসহ আরও অনেক নন-ট্রেডিশনাল পণ্য রপ্তানি করেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন দেশকে এগিয়ে নিতে হলে বেসরকারি খাত প্রয়োজন। ঠিক সেসব ভিত্তির ওপরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে কাজ শুরু করলেন। বেসরকারি খাতের বেশ কিছু কাজ প্রথম হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে। ১৯৯৬ সালে প্রথম বেসরকারি খাতে এয়ারলাইনস লাইসেন্স দেওয়া হয়। এ ছাড়া শেখ হাসিনার সময়ে পাওয়ার জেনারেশনে বেসরকারি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখন বেসরকারি খাতে টেলিভেশন স্টেশনের লাইসেন্সও দেওয়া হয়। এ ছাড়া ব্যাংক ও ইন্স্যুরেন্সের বেসরকারি খাতে অনেক লাইসেন্স বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রথম ক্ষমতায় এসে দিয়েছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম ও পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইব্রাহিম।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ধারাটি ৭০ দশকে বঙ্গবন্ধুর আমলেই শুরু হয়েছিল। বারডেম হসপিটালে সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিবিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ৭৭টি প্রজেক্ট তালিকাভুক্ত হয়েছে। ২০০৯ সালে দেশে সরকারি বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছিল ১৫ শতাংশ। একই সময়ে বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল ৮৫ শতাংশ। ইতোমধ্যে বেসরকারি খাত অনেকটা পরিণত হয়েছে।

এ ছাড়া এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমাদের দেশে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) এক ধরনের অনাস্থার তৈরি হয়েছে। বেসরকারি বিনোগকারীদের সরকার বিশ্বাস করতে পারে না। আবার বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা সরকারকে বিশ্বাস করতে পারে না। এ রকম যেসব অনাস্থা রয়েছে তা দূর করতে হবে। এ ছাড়া ইমোশনাল সিদ্ধান্ত থেকে আমাদের বের হতে হবে। কারণ আমরা পিপিপিতে অনেক বেশি সফল না। তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হলে আমাদের ঢাকার যানজট অনেক কমবে। এটা আমাদের একটি সাফল্য। এ রকম রেলসহ অনেক কিছু আমাদের দরকার। আমরা এসব কাজ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে করতে পারি।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর