শিরোনাম
বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বন্যপ্রাণী পাচারকারী চক্র সক্রিয় খুলনায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী পাচারকারী চক্র আবারও সক্রিয় হয়েছে। গত কয়েকদিনে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরায় হরিণ, কচ্ছপ তক্ষকসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচারকালে আটকের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করে বনে ঢুকে শিকারিরা ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করছে। পরে হরিণের মাংস, চামড়া ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গ কালোবাজারে বিক্রি করছে।

সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বাগেরহাটের মোংলা, শরণখোলায় সবচেয়ে বেশি হরিণের মাংস পাওয়া যায়। ২ নভেম্বর কয়রায় হরিণের মাংস পাচারকালে ৩০ কেজি মাংসসহ আদম আলী গাজী (৩৮) নামের একজনকে আটক করে বন বিভাগ। তার বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী নিধন আইনে মামলা হয়েছে। বাগেরহাট পুলিশ চলতি বছরই সুন্দরবন থেকে শিকার করা হরিণের চারটি মাথাসহ ১৯টি হরিণের চামড়া জব্দ করে। এদিকে ২১ নভেম্বর খুলনার পাইকগাছা বাজার থেকে ২১টি কচ্ছপসহ মনোরঞ্জন ম ল নামের এক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। পরে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২’ অনুযায়ী মনোরঞ্জন ম লকে জরিমানা ও কচ্ছপ অবমুক্ত করেন। ২১ নভেম্বর রাতে নগরীর রূপসা স্ট্যান্ডরোডে মোল্লাবাড়ি থেকে তক্ষক কেনাবেচার সময় চারজনকে আটক ও একটি তক্ষক উদ্ধার করা হয়। আটককৃতরা গহীন জঙ্গল থেকে তক্ষক সংগ্রহ করে পাচারকারীর কাছে বিক্রি করতেন। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে তিনজনকে ছয় মাসের কারাদ  ও আরেকজনকে আর্থিক জরিমানা করা হয়।

 পাচারকারীদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে স্থানীয় একটি চক্র বনে ঢুকে খাদ্যে বিষ মিশিয়ে অথবা ফাঁদ পেতে বন্যপ্রাণী ধরে। পরে চামড়া ও মাংসসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংরক্ষণ করে গোপনে চোরাচালানিদের কাছে পৌঁছে দেয়। সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, বাঘ হত্যা কিছুটা কমলেও একেবারে বন্ধ হয়নি। বাঘের প্রধান খাবার হরিণ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী শিকারও বন্ধ হয়নি। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, বন্যপ্রাণী শিকার বন্ধে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্থানীয়দের মাঝেও সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে বিচ্ছিন্ন হরিণ শিকারের ঘটনা ধরা পড়লেও সে তৎপরতা এখন অনেকটাই কমেছে।

সর্বশেষ খবর