বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
বিএনপির সমাবেশ

সফলতা নিয়ে দুই পক্ষের দুই মত

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

পথে পথে বাধা, পুলিশের হয়রানি, পরিবহন ধর্মঘট এড়িয়ে রাজশাহীতে বড় জমায়েত করতে পেরেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র নেতারা বলছেন, নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে এমন কর্মসূচি শেষ পর্যন্ত সফলভাবে করতে পেরেছেন তারা। ফলে এ অঞ্চলের তৃণমূল কর্মীরা চাঙা হয়েছেন। দীর্ঘদিন পর বড় আকারের এই কর্মসূচির মাধ্যমে দলের সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে। দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধও কমে এসেছে। সরকারের তরফ থেকে নানাভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টায় সাধারণ মানুষের সহানুভূতিও গেছে বিএনপির ঘরে। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, বিএনপির সমাবেশ সফল হয়নি। দলটির নেতাদের কেউ কেউ অবশ্য মনে করেন, বাধার মুখেও রাজশাহীতে বিএনপি যেভাবে জমায়েত করেছে, তা গত ১৪ বছরে প্রথম ঘটনা। সরকার কঠোর অবস্থানে থাকলে এমনটা হওয়ার সুযোগ ছিল না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, কর্মীদের এই মনোবলকে শক্তি হিসেবে দেখছে বিএনপি। এর মধ্যদিয়ে কর্মীদের ঐক্য আরও সংহত হয়েছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রতিটি থানা, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও মহানগরের ওয়ার্ড পর্যায়ে বিভেদ ভুলে এক সঙ্গে প্রস্তুতিসভা করেছেন নেতা-কর্মীরা। সমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দলের জন্য ভালোবাসা ছিল বলেই মানুষ খোলা আকাশের নিচে এই শীতের মধ্যে থাকতে পেরেছেন। পথে পথে বাধা পেয়েছেন, মোটরসাইকেলের ওপর আক্রমণ হয়েছে। মামলা ও গ্রেফতারের ভয় না করে গ্রামের যে মানুষগুলো হেঁটে তিন দিন আগে সমাবেশে এসেছিলেন, তাদের মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় হয়েছে। তবে বিএনপির সমাবেশ পুরোপুরি সফল হয়েছে, এমনটা প্রকাশ্যে বলছেন না আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। তারা মনে করছেন, তাদের দল ও সরকার বিএনপিকে সুযোগ দিয়েছে। যে কারণে বিএনপি জমায়েত করতে পেরেছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীর মানুষ বিএনপির সমাবেশ প্রত্যাখ্যাশ্বেন করেছেন।

 বিএনপি ঘোষণা দিয়েছিল ১৪ লাখ মানুষের সমাগম ঘটাবে।

উত্তরে শহরের আমচত্বর, পশ্চিমে কাশিয়াডাঙ্গা ও পূর্বে তালাইমারী পর্যন্ত তাদের জমায়েত ছড়িয়ে পড়বে। বাস্তবে দেখা গেছে, মাঠেই লোক ছিল না। যারা ছিল, তারা নিজেরা নিজেরা মারামারি করেছে।

ধারাবাহিক বিভাগীয় গণসমাবেশের অংশ হিসেবে গত ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে সমাবেশ করে বিএনপি। এতে মূলত রাজশাহী বিভাগের আট জেলার নেতা-কর্মীরা যোগ দেন। এই সমাবেশ সামনে রেখে গত ১৫ নভেম্বর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মামলা শুরু হয়। সমাবেশের আগের দিন পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগে ৬১টি মামলায় ১১৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি আট জেলায় ১ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট ডাকে। এতে তৈরি হয় জনদুর্ভোগ। বিএনপির নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ ধর্মঘট শুরু হওয়ার আগে বুধবার রাতে রাজশাহী চলে আসেন। মাদরাসা মাঠের পাশে ঈদগাঁহ মাঠে তাঁবু টাঙিয়ে তিন-চার দিন সেখানে অবস্থান করেন।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর