খুলনা নগরীর দক্ষিণপূর্ব প্রান্তে ক্ষেত্রখালী খাল হয়ে নগরের বর্জ্যপানি রূপসা নদীতে নিষ্কাশন হয়। কিন্তু রূপসা ব্রিজের কাছে নদী ও খালসংযুক্ত স্লুইচগেটটি দীর্ঘদিন অকার্যকর থাকায় এখন জোয়ারের সময় নদীর পানি উল্টো নগরে ঢুকে পড়ে। এতে প্রতিদিন দুই বেলা জোয়ারে টুটপাড়া মেইন রোড, বড়ু খালপাড়ু, মতিয়াখালী, মোল্লাপাড়া, জিন্নাহপাড়া, টিবি ক্রস রোডসহ ৩০, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে বিভিন্ন বাসাবাড়ি রাস্তাঘাট হাঁটুসমান পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, প্রতিদিন বেলা আড়াইটা থেকে জোয়ারে নদীর পানি ক্ষেত্রখালী খাল হয়ে নগরে ঢোকে। শুরুতে সংযুক্ত ড্রেনগুলো পানিতে ভরে ওঠে। তার পর ড্রেন উপচে নোংরা পানি বাসাবাড়ি এবং দোকানে ঢুকতে থাকে। বিকালের মধ্যে রাস্তাঘাটে হাঁটুপানি জমে যায়। যা থাকে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত। আবার রাত আড়াইটা থেকে দ্বিতীয় দফায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট।
মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা আসাবুর রহমান কাজল জানান, এখানকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ দুই-তিন বছর ধরে দুর্ভোগে রয়েছেন। বর্ষকালে জোয়ারের পানি বাড়ুলে ড্রেনের নোংরা পানিতে ঘরবাড়ি, রান্নাঘর, টয়লেটসহ আশপাশে সবকিছু তলিয়ে যায়। রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে থাকায় যানবাহনও এ পথে চলাচল করে না। হাঁটুসমান পানির ভিতর দিয়ে যাতায়াত করতে হয় ভুক্তভোগীদের। ক্রমেই অসহনীয় হয়ে উঠছে এখানকার জনজীবন।
অভিযোগ রয়েছে, অপরিকল্পিত সড়ুক ড্রেন নির্মাণ, উন্নয়ন কাজে ধীরগতি ও নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ না করায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। সরেজমিন গতকাল দুপুরে দেখা যায়, নগরীর খানজাহান আলী রোডের বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। খুলনা সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আরিফ হোসেন মিঠু বলেন, রাস্তা সংস্কার কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদী ও খালসংযুক্ত স্লুইচগেট ভেঙে ফেলেছে। নতুনভাবে স্লুইচগেট নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ুছে।
সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক মো. আনিসুজ্জামান বলেন, জোয়ারের সময় নগরের বর্জ্য পানি অপসারণের জন্য বিভিন্ন স্থানে পাম্প হাউস নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় রূপসায় ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বুস্টার পাম্প স্থাপনে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ পাম্প দিয়ে জোয়ারের সময় পানি পাম্প করে নদীতে ফেলা হবে। ফলে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থাকবে না।