বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপানে রয়েছে বাংলাদেশি দক্ষ শ্রমিকের কাজেন অপার সুযোগ। কিন্তু প্রয়োজনীয় উদ্যোগ, যোগাযোগ এবং ভাষাগত সমস্যাসহ নানা কারণে নষ্ট হচ্ছে সেই সম্ভাবনা। অথচ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলেই ১২টি সেক্টরে প্রতি বছর জাপানে পাঠানো সম্ভব হাজার হাজার দক্ষ শ্রমিক। এতে করে বৃদ্ধি পেত বৈদেশিক আয়।
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ইন জাপানের সদস্য মোহাম্মদ সোলায়মান হোসেন সালমান বলেন, জাপানে বাংলাদেশি দক্ষ শ্রমিকদের কাজের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় যোগাযোগের অভাব ও ভাষাগত সমস্যাসহ নানান কারণে এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারছে না বাংলাদেশ। অথচ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিলেই জাপানে প্রচুর দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারে বাংলাদেশ।’ তিনি বলেন, ‘জাপানে শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া অন্যান্য দেশের তুলনায় আলাদা। এখানে শ্রমিকের দক্ষতার সঙ্গে জাপানি ভাষায় দক্ষ হতে হবে। যা বাংলাদেশিরা এখানে আসার আগে অর্জন করে না। তাই সুবর্ণ সুযোগ মিস করছে। তবে দক্ষতার সঙ্গে সঙ্গে ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করলেই প্রতি বছর কয়েক হাজার শ্রমিক পাঠানো সম্ভব হবে।’
জানা যায়, বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপান। জন্মহার কম হওয়ায় এবং জনসংখ্যার সংকটের কারণে এ দেশে রয়েছে কর্মক্ষম মানুষের অভাব। এ শূন্যতা পূরণ করে বাংলাদেশিদের চাকরি ও সম্মানজনক আয়ের সুযোগ রয়েছে। জাপান প্রতি বছর ১২টি সেক্টরে বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নেয়। এ সেক্টরগুলোর মধ্যে রয়েছে- নার্সিং কেয়ার, ভবন পরিষ্কার, মেশিন পার্টন অ্যান্ড টুলিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিনারি, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ইনফরমেশন ইন্ডাস্ট্রিজ, নির্মাণ, শিপবিল্ডিং অ্যান্ড মেরিন মেশিনারি ইন্ডাস্ট্রি, অটোমোবাইল রিপেয়ার অ্যান্ড মেইনটেনেন্স, অ্যাভিয়েশন, আহার ও বাসস্থান, কৃষি, মৎস্য চাষ, খাদ্য ও পানীয় উৎপাদন এবং খাদ্য পরিষেবা শিল্প। কিন্তু বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের মধ্যস্থতাকারী এজেন্সিগুলোর অদক্ষতা, জাপানে নিয়োগকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের অভাব, সরকারি তরফ থেকে প্রয়োজনীয় তদারকির অভাবের কারণে নষ্ট হচ্ছে অপার সম্ভাবনা। তাই অভিবাসী শ্রমিক নেওয়া অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশিরা পিছিয়ে রয়েছে। অথচ জাপানে ‘টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং’ ও নির্দিষ্ট দক্ষ কর্মী’ স্কিমের আওতায় বাংলাদেশিদের নিয়োগের বিষয়ে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের পৃথক সমঝোতা স্মারক (এমওসি) সই করে। টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, জাপানে অধ্যাপক, গবেষক ও প্রকৌশলীদের মতো পেশাজীবী হিসেবে বাংলাদেশিদের কাজ করার সুযোগ আছে।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তালিকায় বলা হয়েছে- বিএমইটি ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) পাশাপাশি প্রায় ৭০টি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি জাপানে কর্মী পাঠানোর অনুমোদন পেয়েছে।