চট্টগ্রামে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে গত ৫ আগস্টের পর বেশ কয়েকজনকে বহিষ্কার করেছে দলটি। সর্বশেষ এস আলম গ্রুপের গাড়ি সরানোর অভিযোগে জেলার তিন শীর্ষ নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর কালুরঘাট শিল্প এলাকার মীর গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ওয়্যারহাউস থেকে একে একে ১৪ বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়। গাড়ি সরিয়ে নেওয়ার একটি ভিডিওতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম, পটিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব অহিদুল আলম চৌধুরী পিবলু, ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ হোসেন নয়নকে দেখা যায়। তাদের সঙ্গে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়ির চালক মনসুরও ছিলেন। বিএনপি নেতারা সশরীরে উপস্থিত থেকে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার স্বজনদের ব্যবহৃত গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। দলের অভ্যন্তরে এসব নিয়ে শুরু হয় নানা সমালোচনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার দক্ষিণ জেলা বিএনপির শীর্ষ তিন নেতা আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম এবং কর্ণফুলী থানা বিএনপির আহ্বায়ক এস এম মামুন মিয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়। পরেরদিন রবিবার রাতে তিন নেতার প্রাথমিক সদস্যপদ স্থগিত করে বিলুপ্ত করে দেওয়া হয় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। দল ক্ষমতাকালীন সময়ে কোনো ধরনের সুবিধা না নিয়েও দলের কঠিন সময়ে আগলে ধরেছেন এনামুল হক। যার কারণে দলের ভিতরে বাইরে তার শক্ত অবস্থান রয়েছে। এর আগে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ৫ আগস্টের পরে নগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আসিফ চৌধুরী লিমনকে পদ থেকে অব্যাহতি, নগর যুবদলের সহসভাপতি নাসিম চৌধুরী, জাহিদ হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়। গতকাল (সোমবার) নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আলী মুর্তজা খানকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল। পাশাপাশি দলের নেতা-কর্মীদের তার সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ না রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশীদ বলেন, বহিষ্কার ও অব্যাহতি দলের একটি চলমান প্রক্রিয়া।
আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা হচ্ছে যে, বিএনপি সমর্থকের দল। এ দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী বিএনপিকে বিশ্বাস করে। বিএনপিও জনগণকে বিশ্বাস করে। সুতরাং জনগণের জানমাল ও নিরাপত্তায় বিএনপিকে সদা সর্বদা জাগ্রত থাকতে হবে। বিএনপি কখনো কোনো দখলদারিত্ব, কারও প্রতি জুলুম হয়- এমন ধরনের কোনো অন্যায় অপকর্মে প্রশ্রয় দেবে না। তারেক রহমানের নির্দেশনা মতোই আমরা জনগণের পাশে আছি। তিনি আরও বলেন, দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি অপকর্ম করে তবে তার রক্ষা নেই। যে অপকর্ম করবে তাকে বিএনপি করার মতো সুযোগ আর হবে না। কেউ যদি মনে করে অতীতের সরকার করেছে, আমরা বঞ্চিত ছিলাম এত বছর- এখন আমরাও করব। তা কিন্তু হবে না। এরপরও যদি কেউ আওয়ামী লীগ বা কারও প্ররোচনায় পড়ে কোনো ধরনের অনৈতিক কাজের দায়িত্ব নেয় বা অপকর্ম করে- তাহলে তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।