পদত্যাগ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। গতকাল তিনি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পদত্যাগের চিঠি গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। গতকাল পদত্যাগপত্র পাওয়ার পর বিকালেই তা গ্রহণ করে এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে গেজেট প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৭৪ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতির নিকট স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্পিকার পদ হতে পদত্যাগ করেছেন এবং তাঁর পদত্যাগ পত্রটি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে গৃহীত হয়েছে এবং উক্ত তারিখে কার্যকর হয়েছে’।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এর পর রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ২৭ দিনের মাথায় পদত্যাগ করলেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে স্পিকার নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। পরে তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলে ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল স্পিকার নির্বাচিত হন শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এর পর থেকে তিনিই এ দায়িত্বে রয়েছেন। ৭ জানুয়ারি বিএনপিবিহীন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর শিরীন শারমিন চৌধুরীকে আবার স্পিকার নির্বাচিত করা হয়। দেশে ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট ও সরকার পতনের পরে সহিংসতায় ৭৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। রংপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্বর্ণশ্রমিক মুসলিম উদ্দিন (৩৮) নিহত হওয়ার ঘটনায় ২৭ আগস্ট শিরীন শারমিন চৌধুরী, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। বাংলাদেশের সংবিধান বলছে, পদত্যাগ করলেও নতুন স্পিকার দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত শিরীন শারমিন চৌধুরীই পদে থাকছেন বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ ত্রয়োদশ সংসদের নির্বাচিত স্পিকার দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত শিরীন শারমিনই স্পিকার হিসেবে গণ্য হবেন। তিনিই নতুন সংসদের সদস্যদের শপথ পড়াবেন। সংবিধানের ৭৪ অনুচ্ছেদে স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের পদ কীভাবে শূন্য হবে, সে বিধান বলা আছে। সেখানে সংসদ সদস্য পদ না থাকা, পদত্যাগ করাসহ ৫টি কারণে স্পিকারের পদ শূন্য হবে বলে বলা আছে। তবে একই অনুচ্ছেদে বলা আছে, এসব বিধান সত্ত্বেও ক্ষেত্রমতে স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকার তাঁর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল রয়েছেন বলে গণ্য হবে।